ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নান্দাইলে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪, ০৬:৫১ পিএম

নান্দাইলে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

অবৈধভাবে জমি দখল,চাঁদাবাজী লুটতরাজ, ধর্ষন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে ময়মনসিংহের নান্দাইলে খারুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মিলন মিয়াও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী। শুক্রবার (২০সেপ্টেম্বর) দুপুরে মানববন্ধন শেষে স্থানীয় বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী মোশাররফ হোসেন জানান, তিনি বাড়িতে তার স্ত্রীকে রেখে ঢাকায় চাকরী করতেন। এ অবস্থায় মিলন তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করার সুযোগে স্ত্রীকে সুদে ৫ হাজার টাকা দেয়। পরে সে টাকা সূদে আসলে ৭০ হাজার হলে বাড়ি ভিটা লিখে দিতে বলে। বাকি টাকা পরে দিবে বলে তার ৪২ শতক জমি মিলন রেজিস্ট্রি করে নিলেও সে টাকা এখন পর্যন্ত দেয়নি। টাকা চাইলেই তাকে হত্যার হুমকি দেয় মিলন। এ কারণে তিনি বাড়িতে বসবাস করতে পারছেননা। এ নিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দিলেও আওয়ামী রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় বিগত দিনে পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

প্রতিবেশি মাজেদা খাতুন জানান, মিলন মিয়ার সাথে তার সম্পর্ক মামাত-ফুফাতো ভাইবোন। মিলন তার কিছু জমি বিক্রি করতে চাইলে মাজেদা মেয়ের জামাতাকে কিনে দিতে রাজি হন। এরপর রেজিষ্ট্রি করে দিব,দিচ্ছি করে একাধিকবার ৩৭ লাখ টাকা নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে জমি রেজিষ্ট্রি করে তো দিচ্ছেইনা উপরন্ত চাপ দিলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে জমি বা টাকা না পেয়ে মেয়েকে তালাক দিয়েছে জামাতা। এ কথা বলার পরই তিনি সংবাদ সম্মেলনেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

প্রতিবেশি মানিক মিয়া বলেন, তিনি মিলন মিয়ার ভাই মোসলেমের কাছ থেকে আড়াই বছর পূর্বে ৪ লাখ টাকায় ৮০ শতক জমি বন্ধক নেন। কিন্তু বন্ধকের টাকা ফেরত না দিয়েই দুইমাস পূর্বে সে জমি মোসলেম নিজে চাষাবাদ শুরু করছে। টাকা চাইতে গেলে মোসলেম আমার কাছে আরও ১০ লাখ টাকা পাবে বলে দাবি করছে। এ বিষয়েও তিনি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

বর্তমান স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কদ্দুস বলেন,গত ইউপি নির্বাচনে মিলন মিয়া পরাজিত হয়েও কারসাজি করে অল্প ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেছে দেখিয়ে শপথ নেয়।পরবর্তীতে আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত তাঁকে জয়ী করে রায় দিলে সম্প্রতি তিনি সদস্য হিসাবে শপথ নেন। 

তিনি আরও বলেন, মিলন মিয়া আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে সব আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে যা খুশি তাই করেছে এবং করছে। তার মত একজন সুদখোর,ভূমিধস্যু, চাঁদাবাজ ও নারী লোভী এলাকায় দ্বিতীয়টি নেই। সংবাদ সম্মেলন শেষে স্থানীয় লোকজন মিলন মিয়ার বিচার দাবি করে নান্দাইল -দেওয়ানগঞ্জ সড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

এ বিষয়ে মিলন মিয়ার ভাষ্য তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ একটিও সত্য নয়। তিনি জানান, আপদে বিপদে তিনি লোকজনদের টাকা দিয়ে সাহায্য করে থাকেন,সময়মত সে টাকা দিতে না পেরে অনেকেই তাদের জমা-জমি তারঁ নামে লিখে দেন।এতে তাঁর(মিলনের)দোষ কি ? মাজেদার অভিযোগ সম্পর্কে জানান,তাঁর কাছ থেকে তিনি কোন টাকা নেননি। অন্যদের টাকা দিয়ে এখন তার উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। 

এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুল মজিদ জানান মিলন মেম্বারের বিরুদ্ধে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি, আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরবি/জেডআর

Link copied!