নারায়ণগঞ্জে জেলায় একটি অন্যতম প্রাচীন উপজেলা ও মুঘল আমলে বাংলার রাজধানী সোনারগাঁ। এই সোনারগাঁয়ে বর্তমানে দর্শনার্থীদের জন্য একটি দৃষ্টিনন্দন জায়গায় পরিনত হয়েছে। মেঘনা নদীর তীরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভবনাথপুর মৌজায় শত শত বিঘা জমির উপর কাঁশফুল যেন সৌন্দর্যের আরেক নীলাভূমি, যেখানে প্রাকৃতিক নিয়মেই জন্মেছে সুদূর প্রসারী কাঁশফুল।
নজরকাড়া কাঁশফুলের সৌন্দর্যের কাছে ছুটে যাচ্ছে স্থানীয় ও দূর দুরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীগণ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে পার্শবর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা পয়েন্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২.০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে সোনারগাঁ থানার নিকটতম ভবনাথপুর ও কান্দারগাঁও গ্রামের মাঝামাঝি মেঘনা নদীর কুল ঘেষে পর্যটকদের মন মাতাচ্ছে এই কাঁশফুল। বর্ষাকে বিদায় দিয়ে প্রকৃতিতে এখন চলছে শরতের দাপট। শরতকে বলা হয় শুভ্রতার প্রতীক। শিউলি ফুল, স্বচ্ছ আকাশ। আর শরতকে স্বাগত জানাতে সবুজের মাঝে মেতে উঠেছে কাঁশবন। শরৎ এলেই সাদা ফুলে গোটা এলাকা ছেঁয়ে যায়। ভিড় জমে যায় কাঁশবনে কিশোর-তরুণসহ সব বয়সী মানুষদের।
চারদিকে শুভ্র কাঁশফুল, শরীর মন জুড়িয়ে দেয় বাতাসে। পুরো এলাকা যেন রূপ নেয় গ্রামীণ মেলায়। কেউ বা ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন, কেউ হেঁটে বেড়াচ্ছেন। কেউ আপনমনে গুনগুন করে গাইছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসছেন এই কাঁশবনে। সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে ওইসব স্থানে প্রকৃতিপ্রেমীদের দেখা যায়। কেউ ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন।
কাঁশফুলের শুভ্র আভা ও দৃষ্টিনন্দন রূপ যে কারোর নজর কাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর শরৎ ঋতু মানেই আকাশে শুভ্র মেঘের ভেলা ও কাঁশের বনে সাদা কাঁশফুলের অপরূপ মেলা। শরৎ ঋতুর আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিকে আরও মায়াবী রূপে সাজাতে কাঁশফুল যেন বিন্দুমাত্র কাপর্ণ্য করে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায, কাঁশফুল ঘিরে মানুষের ভীড়। পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা লোকজনের ভীড় মুখরিত হয়ে ওঠে সে জায়গাটি। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, সাদা মেঘের সঙ্গে এই কাঁশফুলের সাদা রং মনকেও সাদা করে দেয়।
কাঁশফুলের শুভ্রতার ছোঁয়া পেতে আর বিপর্যস্ত সময়ে প্রশান্তির খুঁজে ঘুরতে যাওয়া। যেখানে কাঁশফুল প্রশান্তির পাশাপাশি ছোঁয়া দিয়েছে মনকে। করোনা কালিন সময়ে প্রকৃতি যেন রূপ পেয়েছে নতুন সাঁজে। প্রাকৃতিক সাঁজে বিধাতার জমিনে এই সাদা মেঘের বেলা চলতে থাকুক প্রতিটি মানুষের শেষদিন পর্যন্ত।
দর্শনার্থী মারজিয়া তাসমিম জানান, আমি প্রায়ই আমার পরিবারের সদস্যদের সাথে কাঁশফুলের এই রাজ্যে ঘুরতে আসি। বাতাসের সাথে উড়ে যাওয়া ছেড়াছেড়া কাঁশফুল দেখতে অনেক ভাললাগে। মেঘনা নদীর তীরে শির-উচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কাঁশফুলগুলো যেন হাতছানি দিয়ে বারবার কাছে ডাকে! এখানে আসলে মন ভালো লাগে, তাই বারবার ছুটে আসি।
আপনার মতামত লিখুন :