ঢাকা সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মেহেরপুরে পুলিশি কার্যক্রম স্বাভাবিক না থাকায় বেড়েছে অপরাধ

মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ১১:০৫ এএম

মেহেরপুরে পুলিশি কার্যক্রম স্বাভাবিক না থাকায় বেড়েছে অপরাধ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পুলিশি কার্যক্রম না থাকায় মেহেরপুরে বেড়েছে চুরি,  ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকের রমরমা ব্যবসা। ডাকাতের ভয়ে সন্ধ্যার আগেই এলাকার জনপদ হয়ে পড়ে জনশূন্য। যোর কারণে চুরির ভয়ে রাত জেগে বাড়ি পাহারা করছেন গৃহস্তরা। পুলিশের একরকম নিস্ক্রিয়তা ও টহল না থাকায় খুন, চুরি ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদক সরবরাহ ঘটনা বেড়েছে বলে জানয়েছেন এলাকাবাসি। এদিকে পুলিশ বলছে, আগের মতো বিভিন্ন রাস্তায় বিক্ষিপ্ত টহল না থাকলেও নিয়মিত টহল রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারে পতন ও দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ফাড়ি ও থানায় আগুনের ঘটনা ঘটলেও মেহেরপুরের কোন স্থানেই তেমন কোন থানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু দেশের পুলিশ বাহিনী একরকম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার পর সারা দেশের ন্যায় মেহেরপুর অঞ্চলেও অপরাধমূলক কার্যক্রম ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। জেলার পুলিশ ফাড়ি ও ক্যাম্প থাকলেও সেগুলো কার্যত অচল। এলাকায় পুলিশি টহল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সুযোগটি কাজে লাগায় নিশিকুটুম্বরা। খুনের ঘটনা ঘটলেও লাশ উদ্ধারে পুলিশ অনীহা প্রকাশ করে। এতে এলাকাবাসি আরও বিচলিত হয়ে পড়েন।

আগস্ট মাসের ৬ তারিখে গাংনীর বাওট গ্রামে খুনের ঘটনাটি ঘটে। বিএনপির মিছিলে অংশ নেয়া ও ভাংচুরের ঘটনায় নাহারুল নামের একজন খুন হয়। পুলিশকে খবর দেয়া হলেও কোন সাড়া মেলেনি। পরে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহটি থানায় নিয়ে আসে নাহারুলের পরিবার। ওই মাসে আরও কয়েকটি ছিনতাই ও চুরির ঘটনা ঘটে। চলে নীরব চাঁদাবাজি। ভয়ে ভুক্তভোগিরা কেউ অভিযোগ করেনি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে।

চলতি মাসে গত ২০ দিনে বোমা হামলা চুরি ও ছিনতাইয়ের ৮টি ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় আজও কেউ আটক হয়নি। উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি চুরি ও ডাকাতি করা মালামাল। এমনকি মাদকদ্রব্য উদ্ধার বা মাদক পাচারে জড়িতদেরকেও আটক করতে পারেনি পুলিশ।

গত ৬ সেপ্টেম্বর গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে কাজীপুর গ্রামের মাসুদ রানার একটি পালসার মোটরসাইকেল চুরি হয় যার নম্বর মেহেরপুর ল-১১-৪৬১২। একই দিনে বামন্দী-তেতুঁলবাড়ীয়া সড়কে দুই ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধি উপরে বোমা হামলা করে ডিসকভারি (১০০সিসি) মোটরসাইকেল ও নগদ বিশ হাজার টাকা ছিনতাই করেন। আহত হন দুজন।

৯ সেপ্টেম্বর চিৎলা মাঠের মধ্যে পথচারি কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই ও ১৩ সেপ্টেম্বর হাড়াভাঙ্গা গ্রামে আজাদের বাড়ি থেকে গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এসময় জনতার হাতে একজন চোর আটক হয়। একই রাতে মটমুড়া গ্রামে দোকান ভেঙ্গে দোকানের মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে। ২০ সেপ্টেম্বর বাওট বাজার থেকে চুরি হয় একটি এ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল। যার নম্বর কুষ্টিয়া ল ১২-৫০০১।

এলাকাবাসি জানায়, আগে এলাকায় পুলিশি টহল থাকার কারনে কোন খুন চুরি ডাকাতি ও ছিনতাই ছিল না। গভীর রাতেও মানুষ রাস্তাঘাটে চলাচল করতো। এখন সন্ধ্যার আগেই রাস্তাঘাট জনশুন্য হয়ে পড়ে। রাস্তায় বের হলেও পড়তে হচ্ছে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের কবলে। গুরুত্বপুর্ণ কোন কাজে যাবার প্রয়োজন হলে যেতে হচ্ছে দল বেঁধে।

কয়েকজন গরু ব্যবসায়ি জানান, আগে গরু বিক্রির টাকা পয়সা নিয়ে রাতে চলাচল করতে কোন ভয় ছিল না। এখন সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। একটু রাত হলে স্থানীয় ব্যবসায়ি অথবা আত্মীয়দের কাছে টাকা রেখে আসতে হচ্ছে। পুলিশি টহল না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়িরা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করছেন তারা।

আগস্ট মাসে কিছুটা সংকট ছিল। এখন সে সংকটটি বেশ কাটিয়ে ওঠা হয়েছে। আগে বিভিন্ন রাস্তা দুয়েকজন করে পুলিশ বিক্ষিপ্ত টহল দিতো। সে টহলটি এখন নেই। সম্মিলিত টহল রয়েছে। 

মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল আহসান

তবে চুরি ছিনতাই ডাকাতি হচ্ছে সেটি স্বীকার করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আরবি/জেআই

Link copied!