ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বাড়ি ভাংচুর করে লুটপাট, আহত ২

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বাড়ি ভাংচুর করে লুটপাট, আহত ২

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খায়রুল ইসলামের নুতন তৈরী করা বাড়ি প্রতিপক্ষরা ভাংচুর করে সমস্ত মালামালসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ সময় তাদের মারধরে আহত হয়ে খায়রুল ও হেপি আক্তার বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল করেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের কুরাটি গ্রামে। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জানা যায়,উপজেলার চন্ডীপাশা ইউপির কুরাটি গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের (মুক্তিযোদ্ধা নং-০১৬১০০০৭৪০৩) চার ছেলে একই বাড়িতে বসবাস করেন। বাড়িতে প্রবেশের পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকায় খায়রুল অন্যত্র বাড়ি করার জন্য জমি খোঁজতে থাকেন। বাড়ির পাশে সড়কের কাছাকাছি প্রতিবেশি আবু ছিদ্দিক ও আবুল হাসেম তাদের ৫৯ শতক জমি(সাবেক দাগ-১০৬ হাল-৭৪)বিক্রির প্রস্তাব দিলে দুই বছর পূর্বে তিনি ৩০ শতক জমি ক্রয় করেন।

বাকি জমি কেনেন প্রতিবেশি করম আলীর ছেলে মুর্তুজ আলীসহ অন্য ভাইরা। কেনার পর থেকেই জমিটি তাদের কাছে বিক্রির জন্য চাপ দিতে থাকার পাশাপাশি ওই জমিটিও তারা (প্রতিপক্ষরা)কিনেছে বলে প্রচার দিতে থাকে। এ অবস্থায় ২ মাস পূর্বে ক্রয় কার জমিতে মাটি ভরাট করে দুটি টিনের ঘর তৈরী করে বসবাস শুরু করেন খায়রুল।

গত শুক্রবার (২০সেপ্টেম্বর) রাতে নুতন বাড়িতে মিলাদ পড়ানো হয়। পরদিন(২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে প্রতিবেশি করম আলীর ছেলে মূর্তুজ আলী তার ভাইসহ ২০/২৫ জন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁঠা নিয়ে খায়রুল ও তার পরিবারের উপর হামলা চালায়।

হামলায় খায়রুল ও তার শালিকা হেপি আক্তার মারাত্বকভাবে আহত হয়। এ সময় হামলাকারীরা ঘরে থাকা যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাটের পাশাপাশি ঘর তৈরীর যাবতীয় উপকরণও নিয়ে যায়। তুলে নিয়ে যায় ঘর তৈরীতে ব্যবহৃত সিমেন্টের সব পিলারও।

সরেজমিন খায়রুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ঘরের কোন অস্বিত্ব নেই,তবে ভিটার উপর একটি খাটসহ দুএকটি বাঁশের পিলার দাঁড়িয়ে আছে। পাশে ভেঙ্গে চুরমার করা কিছু জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।এ সময় বৃষ্টি ভিজছিল ভিটার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জিনিসপত্র।

খায়রুলের মা নুরজাহান বেগম জানান, ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারঁ ছেলে। পুরাতন বাড়িতে রাতে ইজিবাইক ঢুকাতে পারেনা বলে এখানে এসে বাড়ি করেছিল। কিন্তু ক্রয়ের পর থেকেই প্রতিবেশি করম আলী ও তার ছেলেরা জায়গাটি তাদের বলে দাবি করতে থাকে। তারাই হামলা ও লুটপাট করেছে।

খায়রুলের স্ত্রী দীপা আক্তার জানান,ঘর বাঁধার পূর্বে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সালিশ হয়েছে, কিন্তু প্রতিপক্ষরা সালিশের রায় মানে নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের দুজন নারী জানায় লুট করে নেওয়া টিন ও পিলার দিয়ে করম আলী ওইদিনই(শনিবার)তার বাড়িতে একটি ঘর তৈরী করে ফেলে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খায়রুলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, জমিটি কেনার পর থেকেই প্রতিপক্ষরা জমিটি তাদের কাছে বিক্রির জন্য চাপ দিতে থাকে। বিক্রি না করাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালিয়েছে।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে মুর্তুজ আলীর বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পিতা করম আলীর ভাষ্য,ওই জমি তিনি পূর্বে রাজকুমার সাহার কাছ থেকে কিনেছিলেন। প্রতিপক্ষরা নিষেধ করার পরও জোর খাটিয়ে তাঁর সে জমিতে বাড়ি করেছে,তাই তাদের উচ্ছেদ করেছি। তবে মারধর ও লুটপাটের বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান।

এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আবুল হাসেম জানান,এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!