ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দেশী মাল্টা চাষে সফল কোটালীপাড়ার দম্পত্তি

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ১১:০৩ এএম

দেশী মাল্টা চাষে সফল কোটালীপাড়ার দম্পত্তি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার লাটেঙ্গা গ্রামে মালটা চাষে সাফল্য পেয়েছেন মনোরঞ্জন বিশ্বাস ও উন্নতি দম্পত্তি। ৩৯ বছর ৩ মাস কৃষি বিভাগ চাকরি করে ৬০ বছর বয়সে অবসরে এসে এলাকার মানুষদের কৃষি পরামর্শ দিয়ে ভালোই সময় কাটছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার মনোরঞ্জর বিশ্বাসের। হঠাৎ করোনা মহামারিতে ঘরবন্দি থেকে সময় যেন আর কাটছিল না। 

অন্যদিকে এক ছেলে এক মেয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় চলে যাওয়ায় মনোরঞ্জন বিশ^াসের স্ত্রী উন্নতি বাড়ৈও এসময় একাকিত্বে ভোগেন। তখনই স্বামী-স্ত্রী দুজনে সিদ্ধান্ত মিলে গড়ে তোলেন
মাল্টা বাগান।

এছাড়াও মনোরঞ্জনের বাগানে আছে বিভিন্ন জাতের আম, লিচু, লেবু, কলা ও পেঁপে। পুকুরে রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ। উপজেলার লাটেঙ্গা গ্রামের এই মাল্টা বাগান দেখতে প্রতিদিন ভীড় জমান শতশত লোক। কোটালীপাড়ায় এটাই বড় পরিসরে মাল্টা বাগান। বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় মাল্টা ঝুলছে।

মনোরঞ্জন বিশ্বাস ও উন্নতি দম্পত্তির দেশী মাল্টা বাগান

বাগানের উদ্যোক্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ২০২১ সালে ২৫ শতাংশজায়গাজুড়ে এই মাল্টা বাগান করার পর গত বছর প্রথম ফল আসে। তথন ৫ মন মাল্টা হয়। এবার মাল্টার উৎপাদন যেমন অনেক বেড়েছে তেমনি মানুষের কাছে এর চাহিদাও বেড়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫ মন মাল্টা বিক্রি হয়েছে। এখানকার মাল্টা বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয়না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন বাগানে এসে মাল্টা কিনে নিয়ে যান। এখনও বাগানে ৫ মনের অধিক মাল্টা রয়েছে। আশাকরি আগামী বছর উৎপাদন আরো বাড়বে। 

উন্নতি বাড়ৈ বলেন, বাগান করা এখন নেশায় পরিণত হয়ে গেছে। ছেলেমেয়েরা ঢাকায় লেখাপড়া করে। বাসার রান্নাবান্না শেষ করে পুরো সময়টাই এখন মাল্টা বাগানে কাটে। এবারের মাল্টার ফলন দেখে মনটা ভরে গেছে। এখন জায়গা বাড়িয়ে বাগানটি বড় করা হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে সারিবদ্ধ মাল্টার গাছ। প্রতিটি গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে রয়েছে আধাপাকা সবুজ মাল্টা। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে ডালপালা। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাটেঙ্গা গ্রামের মনোরঞ্জন বিশ্বাস ও উন্নতি দম্পত্তির মাল্টা বাগানে এমন চিত্রই চোখে পড়ে।

এছাড়াও তার এই বাগানে আছে বিভিন্ন জাতের আম, লিচু, লেবু, কলা ও পেঁপে গাছ দেখা গেছে। ফলের বাগানের পাশাপাশি মাছ চাষ ও করেছেন মনোরঞ্জন বিশ্বাস। রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ। উপজেলার বদরতলা গ্রামের জেমস বাড়ৈ বলেন, সেম্পেম্বর-অক্টোবর মাসে বাজারে বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশি সবুজ মাল্টাও বিক্রি হয়।

বিদেশি মাল্টার চেয়ে স্বাদে ও গুনে ভালো, দামও অনেকটা কম হওয়ায় এই মাল্টার চাহিদা বাড়ছে। আমরা প্রায়ই মনোরঞ্জন বিশ্বাসের বাগানে এসে মাল্টা কিনে থাকি। বাগান থেকে তাজা মাল্টা কিনে খাওয়ার মজাই আলাদা। তাছাড়া এই বাগানের মাল্টা যেমন মিষ্টি তেমনি রসালো। তাই সকলের কাছে চাহিদা বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, মাল্টা চাষ লাভজনক। সারাদেশে এর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় কৃষকরা মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। মনোরঞ্জন বিশ্বাসের মাল্টা বাগান দেখে অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহ দেখিয়ে কৃষি অফিসে আসেন পরামর্শ নিতে। আশাকরি আগামীতে মনোরঞ্জন বিশ্বাসের  পাশাপাশি উপজেলায় অনেকেই মাল্টা চাষে এগিয়ে আসবে।

আরবি/জেআই

Link copied!