শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আবু বকর সিদ্দিক বাবু, উল্লাপাড়া

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

রাস্তা নেই, সেতু নেই, নেই স্কুল

উল্লাপাড়ার অবহেলিত গ্রাম রশিদপুর নয়াপাড়া

আবু বকর সিদ্দিক বাবু, উল্লাপাড়া

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

উল্লাপাড়ার অবহেলিত গ্রাম রশিদপুর নয়াপাড়া

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

উল্লাপাড়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হাটিকুমরুল ইউনিয়নে অবস্থিত রশিদপুর নয়াপাড়া গ্রাম। যোগাযোগ বিচ্ছিন এই গ্রাম থেকে বের হবার কোন রাস্তা নেই। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সরস্বতী নদী। নদীর উপর নেই কোন সেতু। বর্ষা মৌসুমে পারাপারের এক মাত্র বাহন ডিঙ্গি নৌকা। খরা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো। গ্রামে নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। দু হাজারেরও বেশি মানুষের বাস এই গ্রামে। পাশ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব আড়াই কিলোমিটার। গ্রামে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ শত। এসব শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন নদীপার হয়ে দূরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতায়াতে পোহাতে হয়
অনেক দুর্ভোগ। এছাড়া গ্রামের সাধারণ লোকজনকেও বাইরে বের হতে ফসলের মাঠের আলপথ দিয়ে চলতে হয়। এসব নানামুখী সমস্যা মাথায় নিয়ে র্দীঘদিন ধরে বসবাস করছেন এখানকার মানুষ।

রশিদপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ আলী, শাহীন রেজা, লিখন আহমেদ ও আব্দুল হাই জানান, উল্লাপাড়া উপজেলার মধ্যে খুবই অবহেলিত গ্রাম তাদের রশিদপুর নয়াপাড়া। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই গ্রামে প্রবেশের একটি রাস্তার জন্য তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে অনেকবার আবেদন করেছেন। আবেদন করেছেন পাশের অপ্রশস্ত সরস্বতী নদীর উপর একটি পাকা সেতুর। কিন্তু তাদের এই আবেদন কখনই আমলে নেয়নি কেউ। গ্রামে অনেক শিক্ষার্থী। কিন্তু নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। পার্শ্ববর্তী চড়িয়া শিকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব আড়াই কিলোমিটার। বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের গ্রাম থেকে উক্ত বিদ্যালয়ে যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়। খরা মৌসুমে বাঁশের সাঁকোতে নদীপাড় হবার সময় প্রায়শঃই দুর্ঘটনার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। বর্ষায় ছোট ডিঙ্গি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় শিশুরা। গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার দুরে বগুড়া-নগরবাড়ি সড়কে যেতে হয় গ্রামবাসীর আলপথ পেরিয়ে। বৃষ্টির দিনে যাতয়াতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। কিন্তু এই দুর্ভোগ নিরসনের কোন উপায় তাদের জানা নেই। এমন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় বসবাস করতে হচ্ছে পুরো গ্রামবাসীর। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে তাদের গ্রাম থেকে বের হবার একটি রাস্তা, নদীতে পাকা সেতু নির্মান ও গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

গ্রামের প্রাথমিক স্তরের শিশু শিক্ষার্থী রনি আহমেদ, তামিম হোসেন, আব্দুল্লাহ ও সুমাইয়া খাতুন জানায়, রাস্তা না থাকায় বর্ষা বৃষ্টির দিনে ফসলের মাঠের আলপথ দিয়ে হেঁটে যেতে অনেকদিন পড়ে গিয়ে কাপড় চোপড় নষ্ট করে বাড়ি ফিরে আসে তারা। আবার নদী পাড় হয়ে সময় মতো স্কুল পৌঁছাতে পারে না। খরা মৌসুমে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পাড় হতে চরম ঝুঁকিতে পড়তে হয়। কখনো কখনো বাঁশ ভেঙ্গে নদীতেও পড়ে গিয়ে আহত হয় তারা। ওই সময় নদীতে হাটু পানি থাকায় তারা নদীতে পড়লেও জীবন বাঁচে তাদের। এতো সমস্যা নিয়ে তাদেরকে স্কুলে যেতে হয় প্রতিদিন।

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অফিস প্রধান উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ উল্লিখিত গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের চলাচলের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, অতিসম্প্রতি তার কার্যালয় থেকে ওই গ্রামের সংঙ্গে পাশ্ববর্তী বগুড়া-নগরবাড়ি সড়কের একটি সংযোগ রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ মিটার রাস্তা নির্মান করা হবে।

পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট রাস্তা নির্মানের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ হলে সরস্বতী নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মানের বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গ্রামবাসীকে সময় দিতে হবে।

উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, একটি গ্রামে এখন সরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনে বেশ কিছু জটিল শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়ের জন্য এক বিঘা জমি দান করতে হবে। সেখানে নিজেরা অবকাঠামো তৈরি করবে। তবে স্কুলে সংশ্লিষ্ট গ্রামের কোন ব্যক্তিকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। বাইরে থেকে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর শিক্ষা অধিদপ্তরে স্কুলটির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা যাবে। এতো সব শর্ত পূরণ করতে চায়না গ্রামবাসী। তবে উক্ত গ্রামের লোকজন তার দপ্তরে এসে এখন স্কুল প্রতিষ্ঠায় তাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের কথা বলেছেন। এটা সম্ভব হলে ওই গ্রামে অবশ্যই স্কুল প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা।

আরবি/জেডআর

Link copied!