শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম

কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম

কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শিক্ষকদের বেতন ও বোনাস বকেয়া, অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বানিজ্য, স্বেচ্ছাচারীতা, দুর্নীতি ও নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে ফুঁসে ওঠেছেন মেহেরপুরের কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে গত রবিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ এনে চড়াও হন মেহেরপুর জেলা শিক্ষা অফিসার আব্বাস উদ্দিন। পরে শিক্ষার্থীদের পুলিশি হুমকি দিয়ে শ্রেনিকক্ষে হয়
বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলাম সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে একটা বড় অংকের উৎকোচ দিয়ে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই তিনি হয়ে উঠেন অসীম ক্ষমতাধর ও স্বেচ্ছাচারী। একক কর্তৃত্ববাদী মনোভাব পোষণ করে তিনি বিদ্যালয়ে একের পর এক অনিয়ম ও দূর্নীতি করতে থাকেন।

বিদ্যালয়ের ১২৫ বিঘা আবাদী জমি, লিচু বাগান ও পুকুর থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৬ লাখ টাকা আয় হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন থেকে আয় হয় প্রায় ৬ লাক টাকা। অথচ তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে শিক্ষক কর্মচারীদের বিদ্যালয় প্রদত্ত ১২ মাসের বেতন ও ৪ টি ঈদ বোনাস দেননি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হলদে পাখি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে মতবিনিময় সভা ও হলদে পাখিদের শিশু দিবস বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন না করে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে জেলা প্রশাসক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সহ প্রায় ৩০ জন প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে বাংলাদেশ গার্লস গাইডস অ্যাসোসিয়েশনে ভুয়া ভাউচার পাঠিয়ে সরকারি বাজেটের ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও আজ অবধি সে অনুষ্ঠান করেননি।

সাবেক মন্ত্রীর যোগসাজসে প্রায় ৫০ লাখ ঘুষ গ্রহণ করে বিদ্যালয়ে ৪ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক তৌফিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ দিয়ে মামলা করেছেন।

যশোর আর্বিটিশন বোর্ড তাকে বিদ্যালয়ে নিজ কর্মে বহাল থাকার অনুমতি দিলেও প্রধান শিক্ষক জোর পূর্বক তাকে দুই বছরেরও অধিক সময় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেননি। উপরন্ত জাহিদ নামের একজনকে মাস্টাররোলে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রায়ই দেড় লাখ টাকা অপচয় করেছেন। এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশ প্রাপ্ত সহকারি শিক্ষকের কাছ থেকে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ পত্র দিতে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্থাপিত আধুনিক
আইসিটি ল্যাব অবৈধ অর্থ উপার্জনের মানষে বহিরাগত লোকদের বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের অনুমতি দিয়ে আইসিটি শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করছেন। প্রতিটা শ্রেণী কক্ষে আধুনিক স্মার্টবোর্ডের মাধ্যমে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকলেও কয়েক লাখ টাকার অপ্রয়োজনীয় স্মার্ট টিভি ক্রয় করে ফেলে রেখেছেন। নিজ অফিস কক্ষে বিলাসী সময় কাটানোর জন্য ছয়টি সিলিং ফ্যান ও দুইটি এসি লাগিয়ে বিদ্যালয়ের অর্থ অপচয় করেছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল ও শিক্ষকদের উপর স্বীয় আধিপত্য বিস্তারের হীন মানসিকতায় সাবেক মন্ত্রীকে ৪ বার বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি করে এনে ৬ লাখ টাকা অপচয় করেছেন। জনতা ব্যাংক থেকে ১১ জানুয়ারী ২০২৩ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। ৬ নভেম্বর ২৩ সালে জনতা ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকা উত্তোলন করে ৭২ হাজার ৭শ ৫০ টাকা শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন দিয়েছেন বাকি ২৭ হাজার ২শ ৫০ টাকা দৈনিক আদায় বইতে ব্যাংকে জমা দেখিয়েছেন কিন্তু উক্ত টাকা জমা না
দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। ২৮ জুন ২৩ থেকে ৬ নভেম্বর ২৩ সাল পর্যন্ত পাঁচটি চেকের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক হিসাব নম্বর ৩২৮ থেকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে শিক্ষকেরা জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন।

এ বিষয়ে শিক্ষর্থীরা বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পুলিশ এনে আমাদের উপর চড়াও হয়ে পুলিশি হুমকি প্রদান করেন।
সহকারি শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক কোনো প্রকার নিয়োম নীতীর তোয়াক্কা না করে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ক্ষমতা দেখিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন না করলেও নিজের উন্নয়ন ঠিকি করেছেন। যেখানে শিক্ষক কর্মচারির ১২ মাসের বেতন ও ৪ বোনাস বন্ধ সেখােেন নিজের প্রভাব বিস্তরের জন্য সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে বিদ্যালয়ে এনে খরচ করেছেন ৬ লাখ টাকা। নিজে তৈরি করেছেন বিলাশ বহল বাড়ি, কিনেছেন অসংখ্য জমি। অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও কি ভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলাম এমন প্রশ্ন বাকি শিক্ষদের মাঝে। শিক্ষকরা আরো বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা
অফিসারে মাধ্যেমে মনগড়া পরিক্ষা নিয়ে ৪ জনকে ৪৫/৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিযোগ দেন প্রথান শিক্ষক। নিয়োগ বানিজ্য, দুর্নীতির বিচার দাবি করেন শিক্ষকরা।

প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলাম বলেন, করোনাকালীন সময়ে স্কুলের আয় না হওয়ায় শিক্ষকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। জমি-জমার টাকার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। নিয়োগের বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় (জনপ্রশাসনমন্ত্রী) সভাপতি ছিলেন, উনি যা বলেছেন আমি তাই করেছি। মন্ত্রীর বাইরে আমার কোন কাজ করার ক্ষমতা ছিলো না। 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্বাস উদ্দিন জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে যদি কেউ দোষী প্রমানিত হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!