ঢাকা শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পাইকগাছার হাসপাতালে ডাক্তার সংকট, পরীক্ষার মেশিন থাকলেও পাঠানো হয় বাহিরে

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৮:৪৪ পিএম

পাইকগাছার হাসপাতালে ডাক্তার সংকট, পরীক্ষার মেশিন থাকলেও পাঠানো হয় বাহিরে

খুলনার পাইকগাছা উপজেলা হাসপাতাল। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

খুলনার পাইকগাছা উপজেলা হাসপাতাল। ৫ লাখ মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা এই হাসপাতাল। কিন্তু ডা. সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে হচ্ছে জনপদের মানুষ।

সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা জেলা সদর থেকে ৬৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালে ২২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৬ জন। এর মধ্যে একজন সংযুক্তিতে অন্যত্র কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও সার্জারি যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা, অপরিচ্ছন্নতা, ওয়ার্ডে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা, ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত বাথরুম, খাবারে অনিয়ম সহ নানা সমস্যা রয়েছে হাসপাতালটিতে। তেলের অভাবে ঠিকমত চলেনা জেনারেটর। গত ৫ মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স। স্থানীয়রা জানান ৩১ বেডের নির্মিত হাসপাতালটি ৫০ বেটে উন্নতি করা হলেও ৫০ বেডের সুবিধা বা সেবার মান বা জনবল বাড়ানো হয় নি। উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও পাইকগাছা উপজেলায় অন্তত পাঁচ লাক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নতি হলেও সেবার মান বাড়েনি। দেওয়া হয়নি চাহিদামতো জনবল। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হাসপতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদ একজন, যাহা রয়েছে। জুনিয়ার কনসালটেন্ট এর পদ ১১টি, রয়েছে ২ টি, আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদ ১টি, যাহা শূন্য, মেডিকেল অফিসার এর পদ ৭ টি, রয়েছে ৩ টি, ডেন্টাল সার্জন এর পদ ২ টি, রয়েছে ১ একটি, নার্সিং সুপার ভাইজার এর পদ ১ এটি, যাহা শূন্য সিনিয়র স্টাফ নার্স এর পদ ৩২ ২টি, য়েছে ২১ টি। মিডওয়াইফ এর এর পদ ৪ টি, রয়েছে ৩ টি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট এর পদ ৭ টি, রয়েছে ৩ টি, ফার্মাসিষ্ট এর পদ রয়েছে ২ টি, রয়েছে ২ টি, স্যাকমো পদ ২ টি, রয়েছে ২ টি, কম্পিউটার অপারেটর ১ টি, ১ এটি, যাহা শূন্য, প্রধান সহকারীর পদ একটি, ১ এটি, পদটি শূন্য, হেলথ এডুকেটরের পদ ১ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, ক্যাশিয়ারের পদ ২ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, প্রধান সহ: কাম কম্পি. অপারেটর এর পদের সংখ্যা ১ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য,, স্বাস্থ্য পরিদর্শক এর পদ ৪ টি, রয়েছে ১ টি, পরিসংখ্যানবিদ ১ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, স্টোর কিপার এর পদ ২ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, সহ: স্বাস্থ্য: পরিদর্শক পদ ১৩ টি, রয়েছে ৮ টি, সহ: নার্স এর পদ রয়েছে ১ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, কার্ডিওগ্রাফার এর পদ ১ টি, রয়েছে ১ টি, কম্পাউন্ডার এর পদ ১ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, ড্রাইভার এর পদ ১ টি, রয়েছে ১ টি, নিরাপত্তা প্রহরীর পদ ২ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, স্বাস্থ্য সহকারীর পদ সংখ্যা ১২ টি, রয়েছে ২১টি। মিডওয়াইম

৬৫ টি, রয়েছে ৪৫ টি, হারবাল এ্যাসিসটেন্ট এর পদের সংখ্যা একটি, রয়েছে একটি, জুনিয়র মেকানিক এর পদের সংখ্যা ১ টি, রয়েছে শূণ্য, অঃ সহঃ কাম কম্পিঃ অপাঃ এর পদের সংখ্যা ৪ টি, রয়েছে ২ টি, টি,এল, সি, এ এর পদের সংখ্যা ১টি, রয়েছে একটি, আয়া পদের সংখ্যা ২ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, কুক/মশালটি এর পদের সংখ্যা ২ টি, রয়েছে একটি, মালী এর পদের সংখ্যা ১ টি যাহা রয়েছে শূণ্য, অফিস সহায়ক এর পদের সংখ্যা ৮ টি, রয়েছে ১ টি, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এর পদের সংখ্যা ৫ টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, ওয়ার্ডবয় এর পদের সংখ্যা ৩টি, যাহা রয়েছে শূণ্য, যেখানে মোট কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা ১৯৪ জন, সেখানে রয়েছে ১০১ জন। শূণ্য পদ রয়েছে ৯৩ টি। সেকারণ এই হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ডেড় শতাধিক রুগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ভর্তি হন ২৫-৩০ জন। চিকিৎস্যা দিতে না পারায় উন্নত চিকিৎসার কথা বলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। প্রতিদিন আউট ডোরে শতাধিক রুগী সেবা নিতে আসেন। এদিকে হাসপাতালের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি মাঝেমধ্যে ঠিক হলেও তা প্রায় বন্ধ থাকে। প্যাথলজি বিভাগ থাকার পর ও পরিক্ষা- নিরিক্ষার জন্য রুগীদের পাঠানো হয় বাহিরের ক্লিনিকে। 

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সোলাদানা গ্রামের রোকেয়া খাতুন জানান, জরুরি বিভাগ থেকে ডাক্তার কয়েকটি পরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলো বাইরে থেকে করিয়ে আনতে বলেন। আমরা গরিব মানুষ। টাকা দিয়ে বাইরে থেকে টেস্ট করানোর অবস্থা নেই। হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ও ডাক্তার থাকলে আমাদের খুবই উপকার হতো। সরল গ্রামের মোমেনা খাতুন বলেন অসুস্থ মাকে নিয়ে চিকিৎস্যার জন্য হাসপাতালে যান। 

তিনি বলেন, সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে এসেছি। সাড়ে ১০টা বাজলো। এখনও ডাক্তার রা আমার মাকে দেখেনী। আউট ডোরে টিকিট নিয়ে বসে আছি। সেবা নিতে এসে সেবা পাচ্ছি না। মারামারি ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোজিনা বেগম জানান, হাসপাতালের দেওয়া খাবারের মান ভাল না। খাবার প্রদানের ক্ষেত্রে রয়েছে অনিয়ম ও দূর্নীতি।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মাহবুবুর রহমান জানান, তিনি অল্প কদিন আগে এখানে যোগদান করেছেন। হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও প্রয়োজনীয় জনবল বাড়ানো হয়নি। হাসপাতালের চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শূন্য পদের জনবল পূরণ হলে জনগণ যথাযথ চিকিৎসার সুবিধা পাবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!