ঢাকা শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

প্রথম দিনে ভারতে গেল সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম

প্রথম দিনে ভারতে গেল সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে গেল। দুই হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির প্রথম চালানে গেল সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন (৫৪ হাজার ৪৮০ কেজি) ইলিশ মাছের মান পরীক্ষার পর দেয়া হয় ভারতে যাওয়ার অনুমতি। প্রতি কেজি মাছের রপ্তানি মূল্য পড়ছে ১০ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২০০ টাকা প্রতি কেজি রপ্তানি মূল্য। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেনাপোল মৎস্য অফিসের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অনুমতিপত্র নিয়ে ইলিশের চালান বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্দরে আসার পর মান নিয়ন্ত্রন যাচাই করে ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়। আজ প্রথম চালানে ১০ টি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় কোন ইলিশ রপ্তানি হবে না। শনিবার আবার হবে। তবে রোববার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ইলিশ নিতে আগ্রহী হলে রপ্তানি করা হবে। মূলত রবিবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোন মাছই আমদানি-রপ্তানি করেন না।

আজ সে সব প্রতিষ্ঠানে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, পাবনার দিলালপুরের মেসার্স আহনাফ ট্রেডিং, কক্সবাজার ফিশারীঘাটের জে. এস এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরার লাবসার সুমন ট্রেডার্স, ঢাকার যাত্রাবাড়ির সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, একই এলাকার স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ, চট্রগ্রামের কালুরঘাটের প্যাসিফিক সি
ফুডস লিমিটেড, পাবনার গোপালপুরের নোমান এন্টারপ্রাইজ, খুলনার রুপসা এলাকার রূপালী সি ফুডস লিমিটেড, যশোরের নড়াইল রোডের জে.বি.এস ফুড প্রোাডাক্টস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও যশোরের জেস টাওয়ারের এম এ পি ইন্টারন্যাশনাল।

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর ৪৯ জন রপ্তানিকারককে ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানিতে ছাড়পত্র দেন অন্তবর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৪৮ জনকে ৫০ মেট্রিক টন করে ও একজনকে ২০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়। এই অনুমতির মেয়াদ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। উৎসবের মৌসুমে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গত কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশ পৌঁছত। আগের সরকারগুলো একে বলত, ‘উপহারের ইলিশ’। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভারতে ইলিশ পাঠানো নিয়ে কঠোর মনোভাবের কথা জানায়। পরে অবশ্য অবস্থান পরিবর্তন করেছে তারা।

বন্দর সংশিষ্টরা জানান, ২০১২ সালে ইলিশ রফতানি বন্ধ হয়েছিল। পরে আবার শুরু হয় রফতানি। গেল বছর রফতানির অনুমতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ মেট্রিন টনের। এবছর অনুমতি মিলেছে প্রায় আড়াই হাজার টনের।

জানা যায়, কলকাতার ভারতীয় মাছ আমদানিকারকদের সংগঠন ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফআইএ) থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়। পরে বিশেষ বিবেচনায় সরকার ভারতে ২৪২০ মেট্রিক টন রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়। এর পর বৃহস্পতিবার থেকে রপ্তানি শুরু হয়। সাধারন ব্যবসায়ীরা বলছেন ইলিশ রপ্তানিতে দুই দেশের মধ্যে সু-সম্পর্ক
বাড়াতে বড় ভুমিকা রাখবে। তবে বিশেষ বিবেচনায় কেবল দুর্গাপূজার ইস্যুতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা হয়। গেল বছর রপ্তানি অনুমতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ মেট্রিন টনের।
রপ্তানি করা হয় মাত্র ৬৩১ মেট্রিক টন ২৪০ কেজি ইলিশ। তবে এবারও সম্পূর্ণ ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে না বলে কয়েকজন অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক জানিয়েছেন। বাজারে ইলিশের দাম চড়া। তারপরও রপ্তানি খবরে মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ইলিশ পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ রয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ১০ মার্কিন ডলার মুল্যে প্রতি কেজি ইলিশ মাছ সরবরাহ করছে। বাংলাদেশী টাকায় যার মুল্য প্রায় ১২০০ টাকা। রাত ৮টা পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ বেনাপোল কাস্টমস হাউজ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ভারতে রপ্তানি করেছেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!