ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে হত্যার পর মরদেহ ৯ টুকরো করে পলিথিনে পেঁচিয়ে পাশের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার অরুণ মিয়া (৭০) প্রথম স্ত্রী মৃত্যুর পর ৩৫ বছর আগে দ্বিতীয় বিবাহ করেন একই গ্রামের মোমেনা বেগমকে। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চরম আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে অরুন মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুবেলের কাছে ঢাকায় চলে যান। পরে স্বামী নিখোঁজ হয়েছেন বলে প্রচারণা চালাতে থাকেন।
এরই মধ্যে গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) অরুণ মিয়া বাড়িতে আসেন এবং স্থানীয় মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন। তবে ওইদিন বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন অরুণ মিয়া।
প্রতিবেশী কুদ্দুস মিয়া বলেন, গত শুক্রবার আমার সঙ্গে অরুণ মিয়া নামাজ পড়েছে। তারপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। তার বউ আমাদের বলেছে, শুক্রবার সকালে সে ঢাকা গিয়েছে। এ বিষয়টি আমাদের সন্দেহ হয়।
এদিকে, হত্যার চারদিন পর মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ফরদাবাদ গ্রাম থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে বাঞ্চারামপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় স্ত্রী মোমেনা বেগম তার মেয়ে লাকী আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে প্রথম স্ত্রীর ছেলে লুৎফর রহমান রুবেল বাদী হয়ে সৎ মা মোমেনা বেগম ও সৎ বোন লাকি আক্তারকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল জানান, পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম স্বামী অরুণ মিয়াকে মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়। মোমেনা মরদেহ ৯ টুকরো করে ৯টি পলিথিনে বেঁধে পার্শ্ববর্তী সৌদি প্রবাসী মনির মিয়ার সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন।
মঙ্গলবার রাতে ওই সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হলে এলাকাবাসী সেখানে পলিথিনগুলো দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে একে একে ৯টি পলিথিন ইট মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করলে অরুণ মিয়ার ছেলে মরদেহ তার বাবার বলে শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় অরুণ মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম ও মেয়ে লাকিকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :