ঢাকা সোমবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৪

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৪, ১২:০৪ পিএম

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মৃৎশিল্পের তৈজসপত্রের জন্য এক সময় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার সুনাম ছিল কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় বর্তমানে দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে ঐতিহ্যবাহী পালপাড়া ও চেংগা পালপাড়া এলাকায় পালবাড়িতে মৃৎশিল্প বিপন্ন হতেনা হতে নতুন প্রযুক্তিতে প্লাস্টিকের রকমারি তৈজসপত্র আসায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পের রকমারি তৈজসপত্র। ‍‍`মৃৎ‍‍` শব্দের অর্থ হচ্ছে মৃত্তিকা বা মাটি আর শিল্প বলতে বোঝানো হয় সুন্দর ও সৃষ্টিশীল বস্ত্তকে। তাই মাটি দিয়ে তৈরি সব শিল্পকর্ম মৃৎশিল্প হিসাবে পরিচিতি।এই শিল্পকর্মের কারিগর যারা সেই শিল্পীদেরকে বলা হয় কুমার। মৃৎশিল্পে মিশে আছে গ্রামীণ বাংলার হাসি-কান্না সুখ-দুঃখের ইতিহাস। আমাদের উপজেলায়  এই শিল্পের ব্যবহার সেই আদিকাল থেকে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, কলস, ব্যাংক, থালা, ফুলের টপ, কড়াই, খেলনা-হাতি, ঘোড়া, পুতুল, বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্মের দ্বারায় তৈরি ফলমূল। এখানকার পথে প্রান্তরে, পর্যটন কেন্দ্রে ও পার্কগুলোতে মৃৎশিল্পের নানা শিল্পকর্ম দেখতে পাওয়া যায়।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে পালপাড়া এলাকা ঘুরে মৃৎশিল্পের কারিগর নরেশ চন্দ্র পাল জানান, ২০০১ সালে মহামারী করোনা রোগের পাদুর্ভাব ঘটায় মৃৎশিল্প একেবারে বন্ধ ছিলো। এরপর পালদের মাটির তৈরি মৃৎশিল্প শুরু হতেই আবার দেশে ডিজিটাল যুগে প্লাস্টিক দ্রব্য দিয়ে নতুন নতুন খেলনা পণ্য, হাঁড়ি, পাতিলসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে বাজারজাত করায় সনাতনী পদ্ধতিতে পালদের মাটির তৈরি মৃৎশিল্পের পণ্য বিক্রি একেবারে কমে গিয়েছে। এতে করে পরিবারের খরচ চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

পালপাড়া এলাকার বসবাসরত একজন বয়জেষ্ঠ্য বাবু প্রদীপ চন্দ্র কুন্ডু বলেন, পালপাড়া থেকে মাটির পাতিল ও কড়াই এনে মাকে দিয়েছি কিন্তু এ যুগে নতুন মানুষেরা চায় প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করতে। যার কারনে পালদের কদর কমে গিয়েছে  বিধায় মাটির তৈরি মৃৎশিল্পের পণ্য বিক্রিও কম।

এরপর দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে চেংগা পালপাড়া এলাকায় ঘুরে তাপস পালের বাড়িতে গিয়ে শিল্পকর্মে কারিগর অনিতা রানী পাল সে মাটি দিয়ে কুয়ার পাট, মাটির কলস, হাঁড়ি পাতিল ও ঢাকনাসহ কিছু চাড়ি তৈরি  করছে।

তাদের সংঙ্গে কথা বলে জানায়, আধুনিক যুগে প্লাস্টিকের পণ্য আসায় আমাদের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহি মাটির মৃৎশিল্প বিক্রি যেমন কমেছে তেমনি মৃৎশিল্পের কারিগরেরা এই ব্যবসার দিয়ে ছেলেমেয়েদেরকে পড়াশুনা করাতে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছে।

অনিতার স্বামী জানান, এই কর্মের পাশাপাশি বিকল্প অন্য ব্যবসা করার চিন্তাভাবনা করছেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!