চুয়াডাঙ্গায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে ওলকচুর চাষ। ওলকচু সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এ চাহিদা থাকায় এ চাষে ঝুঁকছেন অনেক চাষী।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ১২১ হেক্টর জমিতে ওলকচুর চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ৬২ হেক্টর, দামুড়হুদায় ২৯ হেক্টর ও জীবননগরে ১৫ হেক্টর জমিতে ওলকচুর চাষ হয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলার বেতবাড়ীয়া গ্রামের নারী কৃষাণী রহিমা খাতুন জানান, আলমডাঙ্গা কৃষি অফিস থেকে ১০ শতক জমিতে ওলকচু চাষের প্রদর্শনী প্লট পেয়েছিলান। ওলকচু চাষের জন্য কৃষি অফিস ২ বস্তা
জৈবসার, ৯ কেজি পটাশ, ৯ কেজি ড্যাপ, ২ বস্তা ওলকচুর বীজ দিয়েছিল। চলতি মৌসুমে ওলকচুর ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে ওলকচু ক্ষেত থেকে তোলা শুরু হয়েছে। ৩ কেজি থেকে ৫ কেজি ওজন পর্যন্ত ওলকচু ওজন হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের জিয়াউর রহমান লাল্টু জানান, এ ওলকচু ৭-৮ বছর ধরে চাষ করি। ওলকচু চাষে কোনো ঝামেলা নেই। তুলনামূলকভাবে উঁচু ছায়াযুক্ত স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে সহজেই ওলকচু চাষ করা যায়। এটি চাষে কোনো প্রকার বাড়তি সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। বীজ লাগানোর সময় থেকে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। চুয়াডাঙ্গা ওলকচু চাষে খ্যাতি অর্জনকারী ছলিম উদ্দীন বলেন, চৈত্র মাসের শেষের দিকে ও বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে ওলকচু সাধারনত রোপন করা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে কন্দাল ফসল উৎপাদন প্রকল্প থেকে ২০ শতকের উপর প্রদর্শনী প্লট পেয়েছিলান। ওলকচু রোপনের সময় ১০ মন বীজের মূল্য পড়ে ৫০ হাজার টাকা। ১ বিঘায় ওলকচু উৎপাদন, বীজের আকারের উপর নির্ভর করে। প্রতি বিঘায় ওলকচু উৎপন্ন হয় ৭০ মন থেকে ১০০ মন। জমি থেকে বর্তমানে ওলকচু বিক্রি করা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। বাজারে খুচরা মূল্যে ওল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। নিজের বীজ থাকলে বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। ওল বিক্রি হয় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার উপরে। চলতি মৌসুমে তিনি ৪ লাখ কাছাকাছি ওলকচু বিক্রি করতে পারবো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমার সরকার জানান, ওল কচু চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এ চাষাবাদে বাড়তি কোনো সার কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। ওলকচুর চাহিদা দিনেদিনে বাড়ছে। ওল কচুর বাণিজ্যিক চাষাবাদে কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।