১২ শতাংশ জমিতে এবছর বেগুনের চাষ করেছি। মাস দেড়েক আগে প্রতি সপ্তাহে পাঁচ থেকে ৬ মণ বেগুন তুলতাম। কিন্তু অতি বৃষ্টির কারণে ফল-ফুল মরে যাচ্ছে। বেগুন হচ্ছেনা। গত সপ্তাহে মাত্র ৩৪ কেজি বেগুন তুলেছিলাম। তা পাইকারী ১০০ টাকা কেজি করে মোট তিন হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছিলাম।
কথা গুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কৃষক মো. বাবু আলী (৪২)। তিনি উপজেলা চাঁদপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের কুবাদ আলীর ছেলে। একই গ্রামের সবজি চাষী শামিম হোসেন বলেন, গেল বছর ৮ শতাংশ জমিতে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে এক লাখ ৫ হাজার টাকার বেগুন বেচেছিলাম। এবছর বৃষ্টিতে সব ফুল মরে গেছে। এক কেজিও তুলতে পারিনি বেগুন। তাঁর ভাষ্য, মাসখানেক ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি ও হালকা বাতাস লেগেই আছে। এতে জমিতে পানি জমে মরিচ, বেগুন, উস্তেসহ সব ধরনের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। উৎপাদন না হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। কুমারখালী পৌর তহবাজার, স্টেশন বাজার, যদুবয়রার জয়বাংলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। যা সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা। তবে অধিকাংশ বিক্রেতার কাছেই নেই বেগুন।
সবজি বিক্রেতা মনজু শেখ বলেন, বেগুনের সরবরাহ নেই বললেই চলে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় গেল এক সপ্তাহ তিনি বেগুন বিক্রি করছেন না। ক্রেতাদের ভাষ্য, সমান আয়ে বাড়তি দামের সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। নিয়মিত বাজার মনিটারিংয়ের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এ বছর প্রায় ৫৩৬ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম। তিনি বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে প্রায় ৯০ হেক্টর জমির সবজির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে গাছের ফুল ও ফল নষ্ট হয়েছে সবজির উৎপাদন কমে গেছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি। তবে দামে রেকর্ড করেছে বেগুন। অতীতে বেগুনের এতো দাম শোনেননি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত। বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় দাম বেড়েছে। বাজার মনিটারিং আরো জোরদার করা হবে বলে তিনি জানান।