ঢাকা সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪

বর্জ্যের অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে মিঠাছড়ি জৈব সার কারখানা

শাহজাহান চৌধুরী, কক্সবাজার ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৪, ০২:৪২ পিএম

বর্জ্যের অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে মিঠাছড়ি জৈব সার কারখানা

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

বর্জ্যের অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে কক্সবাজারের রামু মিঠাছড়িতে নির্মিত জৈব সার কারখানার উৎপাদন। নির্ধারিত জায়গায় ময়লা না ফেলায় কারখানার সরবরাহ কমে গেছে। উল্টো খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলায় দূষিত হচ্ছে পর্যটন নগরীর পরিবেশ।

জৈব সার উৎপাদন বাড়ানো ও পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, কক্সবাজার পর্যটন শহরের পচনশীল বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে জৈব সার তৈরি করতে ২০১৮ সালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়িতে নির্মাণ করা হয় জৈব সার কারখানা। কক্সবাজার শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পৌরসভার উদ্যোগে ও জলবায়ূ কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থায়নে স্থাপিত হয় জৈব সারকারখানা। এতে ব্যয় হয় দুই কোটি টাকা। এখানে প্রতি মাসে ২০ থেকে ৩০ টন জৈব সার উৎপাদন করার কথা ছিল। কিন্তু বর্জ্য সরবরাহের অভাবে এখানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র আট থেকে ১০ টন সার।

কক্সবাজার শহরে ৫ শতাধিক রেস্তোঁরা, বাজার, বাসা-বাড়ি থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ টন ময়লা-আর্বজনা তৈরি হয়। এসব বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশনে না নিয়ে রাখা হচ্ছে বাঁকখালী নদীর কস্তুরা ঘাটে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কমে আসছে সার তৈরির উৎপাদান।

পৌরসভার অধীনে অন্তত ১০০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী ও বর্জ্য অপসারণের জন্য ১০/১৫টি ট্রাক রয়েছে। এসব পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বর্জ্য অপসারণের জন্য পৌরসভা থেকেও বেতন নেন এবং পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের হোটেল-মোটেল জোন এলাকার তারকামানসহ বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁ থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রতি মাসে ৪/৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে। উত্তোলিত অর্থ ওয়ার্ড সুপারভাইজাররা ভাগভাটোয়ারা করলেও বর্জ্যগুলো জৈবসার কারখানায় না নিয়ে সরাসরি ফেলা হচ্ছে বাঁকখালী নদীর পাড়ে কস্তুরাঘাট এলাকার নতুন ব্রীজের পাশে।

কস্তুরাঘাট এলাকার বাসিন্দা অ্যাড. মোহাম্মদ ইসমাইল ও শাহাদাত হোছাইন জানান, পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, বাসাবাড়ি বর্জ্যগুলো মিঠাছড়ি ডাম্পিং স্টেশনে না নিয়ে প্রকাশ্যে কস্তুরাঘাট এলাকায় ফেলা হচ্ছে। এতে বর্জ্যের উৎকট গন্ধে আশপাশে বসবাসকারীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এছাড়া পরিবেশও দুষিত হচ্ছে।

তারা জানান, এসব বর্জ্যগুলো মিঠাছড়ি ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে গেলে জৈবসার উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি সরকারেরও রাজস্ব আয় হবে।

জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রের ঠিকাদার মো. ইয়াছিন জানিয়েছেন, পৌরসভা এলাকা ও উখিয়া ইনানী এলাকা থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু বর্জ্য আনা হচ্ছে। কিন্তু পর্যটন শহরের কোন বর্জ্য সেখানে ফেলা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত বর্জ্য না পাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে কারখানার সার উৎপাদন। এতে করে কারখানায় নিয়োজিত কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কতৃপক্ষের।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. সালাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, বর্জ্যের অভাবে জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কার কথা জেনেছি। পৌরসভার সাথে সমন্বয় করে কারখানার উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।

পরিবেশ দূষণ রোধে কারাখানার উৎপাদন বাড়াতে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

আরবি/ এইচএম

Link copied!