শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. সেলিম রেজা, নকলা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম

গাছের ফাঁকে হলুদ চাষে বাড়তি আয়

মো. সেলিম রেজা, নকলা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম

গাছের ফাঁকে হলুদ চাষে বাড়তি আয়

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পতিত জমিতে চাষ করা মিশ্র গাছের বাগানে গাছের ফাঁকে হলুদ চাষ করে বাড়তি আয়ের পথ খোঁজে পেয়েছেন কৃষকরা। চাষিরা অধিক লাভের আশায় ফল ও কাঠ বাগানে হলুদ চাষ করে বাড়তি আয় করে কৃষি জগতে সারা ফেলেছেন। এমন কয়েকজন কৃষক শেরপুরের নকলা উপজেলার বাশ্বেরদী ইউনিয়নের মোজার বাজার এলাকার ছইন উদ্দীনের ছেলে দুলাল মিয়া, আনসার আলীর ছেলে লিখন মিয়া ও বানেশ্বরদী এলাকার আশরাফ আলী।

কৃষকরা জানান, গাছের বাগানে সাথী ফসল হিসেবে হলুদের আবাদ বেশি হয়। আর তাইতো বোনাস ফসল হিসেবে কৃষকরা সাথী ফসল হিসেবে হলুদ চাষ করেন। কয়েক বছর ধরে উপজেলার চন্দ্রকোনা, চরঅষ্টধর, পাঠাকাটা, বানেশ্বরদী ও গৌড়দ্বার ইউনিয়নসহ বেশ কিছু এলাকায় মিশ্র গাছের বাগানে হলুদ চাষ করা হয়ে আসছে। তবে এবার কৃষকের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় হলুদের আবাদ বেড়েছে। ফলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অর্জন বেড়েছে।

কৃষক লিখন মিয়া জানান, নতুন করে ফল বা কাঠের কোন বাগান করলে, গাছ বড় হতে কয়েক বছর সময় লাগে। এতে গাছের ফাঁকে বেশ জায়গা পতিত থাকে। ওইসব পতিত জমিতে বিভিন্ন শাক-সবজি, আদা, হলুদ, মরিচসহ স্বল্পকালীন বিভিন্ন ফসল আবাদ করা যায়। এতে গাছের বাগানের কোন ক্ষতি হয়না, বরং গাছের ফাঁকে শাক-সবজিসহ স্বল্পকালীন বিভিন্ন ফসল আবাদ করলে বাড়তি আয় পাওয়া যায়। এছাড়া গাছের ফাঁকের পতিত জমিতে স্বল্পকালীন আবাদ করায় গাছের জন্য বাড়তি কোন সেবাযত্ন করতে হয়না।

অন্য এক কৃষক দুলাল মিয়া জানান, তিনি ২০ শতাংশ জমিতে আম, পেয়ারা, মালটা, লেবুসহ কাঠ জাতীয় বিভিন্ন গাছের রোপন করেছেন। এ বাগানে গাছের ফাঁকের পতিত জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। এছাড়া বাগানের চারপাশে সীমসহ বিভিন্ন সবজির গাছ রোপন করেছেন। তিনি জানান, ২০ শতাংশ জমির গাছের বাগানে হলুদ রোপন করা, ভেড়া দেওয়া ও শ্রমিক মজুরিসহ অন্যান্য সব মিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগের মোকাবেলায় না পড়লে তার ২০ শতাংশ গাছের বাগানে চাষ করা হলুদ হতে ৮০ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় পেতে পারেন বলে তিনি আশাব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নকলা উপজেলা শাখার সাবেক আমীর মুফতি মাওলানা মো. খাদেমুল ইসলাম জানান, নকলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাটি হলুদ আবাদের জন্য বেশ উপযোগী। বিশেষ করে বানেশ্বরদী ইউনিয়নের মাটি হলুদ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাই এখানকার প্রতিটি এলাকায় কমবেশি হলুদ চাষ করা হয়। এমনকি এখানকার কৃষকরা নিজেদের চাহিদা মিটানোর জন্য প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙ্গীনার পতিত জমিতেও হলুদ আবাদ করে থাকেন।

ভুরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব মো. ছায়েদুল হক বলেন, আমাদের কৃষক সংগঠনের প্রায় প্রতিটি কৃষক নিজ নিজ পরিবারের চাহিদা মিটানোর জন্য হলেও হলুদ চাষ করেন। তিনি জানান, প্রতি কাঠা (৫ শতাংশ) জমিতে ২০ কে.জি থেকে ২২ কে.জি বীজ হলুদ লাগে; এবং এতে উৎপাদন হয় ৮ মণ থেকে ১২ মণ। মাটির ধরন, উৎপাদন ও দামের বিবেচনায় হলুদ চাষে লাভ বেশি বলে তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমান বাজার দাম অনুযায়ী প্রতি কাঠাতে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা লাভ থাকে; যা অন্য কোনো কৃষিপণ্যে সম্ভব নয়। হলুদ আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা বা প্রদর্শনী বরাদ্দ দিলে এ উপজেলাসহ দেশব্যাপি হলুদের উৎপাদন বাড়বে বলে তিনি আশাব্যক্ত করেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, এবছর হলুদ আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৩০ হেক্টর। কিন্তু কৃষকের অধিক আগ্রহের কারনে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে ১৫০ হেক্টর জমিতে হলুদ আবাদ হয়েছে। স্বল্প খরচে ও নামমাত্র শ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় নকলা উপজেলায় হলুদের আবাদ দিন দিন বাড়ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহরিয়ার মুরসালিন মেহেদী।

তিনি আরো জানান, নকলায় স্থানীয় জাত সুন্দরী বেশী আবাদ হয়েছে। মাটির ধরন ও সেবার উপর ভিত্তি করে হেক্টর প্রতি ১৭ মেট্রিক টন থেকে ১৯ মেট্রিক টন হলুদ উৎপাদন হয়। কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মুরসালিন মেহেদী আরো জানান, নকলা উপজেলার মাটি হলুদ চাষের জন্য বেশ উপযোগী হলেও হলুদের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি ভাবে কোন প্রণোদনা বা প্রদর্শনী বরাদ্দ দেওয়া হলেও উন্নত জাতের হলুদ চাষের মাধ্যমে আগামীদিনে চাষীরা অধিক লাভবান হতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!