বগুড়ার শাজাহানপুরে সহযোগী স্বপনসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী তালুকদার সাগর হত্যা এবং সোনাতলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থী সাব্বির হত্যা মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আলোচিত জোড়া খুনে জড়িত পান্না তালুকদারকে (৪৮) শাজাহানপুর থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। এছাড়া সোনাতলা উপজেলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজ আলম সোহেলকে (৪৫) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার র্যাব-১২ বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, গত শুক্রবার বিকেলে শহরের কলোনী এলাকা থেকে পান্না তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার সাবরুল হাটখোলাপাড়া এলাকার মৃত মনসুর তালুকদারের ছেলে। গত ২২ সেপ্টেম্বর সাবরুল ছোট মন্ডলপাড়া এলাকায় সাগর বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী তালুকদার সাগর ও তার সহযোগী স্বপন হোসেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মামলার দুই নম্বর আসামি পান্না তালুকদার।
গ্রেপ্তার ব্যক্তি জোড়া খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, একটি হত্যা মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য পান্নার কাছে ৩২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল সাগর। হত্যার হুমকি দেওয়ায় পান্না নিজের জীবন বাঁচাতে সাগরকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
সাবরুল ছোটমন্ডলপাড়া পোল্ট্রি ফার্মের সামনে রাস্তার পাশ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা তালুকদার সাগর ও তার সহযোগী স্বপন হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তার আরেক সহযোগীর কাটা হাত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত সাগরের বোন গত ২৬ সেপ্টেম্বর আশেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হযরত আলীকে প্রধান আসামী করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত সাগর তালুকদার সাবরুল হাটখোলাপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে এবং নিহত স্বপন হোসেন একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। শীর্ষ সন্ত্রাসী তালুকদার সাগরের নামে দুটি হত্যাসহ ১৭টিরও বেশি মামলা ছিল।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গাবতলী উপজেলার শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন (১৪) হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি মাহফুজ আলম সোহেলকে গ্রেপ্তার করেছে সোনাতলা থানা পুলিশ। তিনি উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নর শিহিপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান সরকারের ছেলে এবং দিগদাইড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন্নবী জানান, গ্রেপ্তার আসামিকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগেরদিন উপজেলার সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর স্থানীয় লোকজনের সাথে আনন্দ মিছিলে অংশ নেয় স্কুলছাত্র সাব্বির। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর এলাকায় তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেছিল পরিবার। নিহত সাব্বিরের বাবা শাহীন আলম বাদী হয়ে গত ১৫ আগস্ট সোনাতলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটনসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০/৩০ জনকে আসামি করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :