কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ নিয়ে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে চোখ হারাতে বসেছে অসহায় দিন মজুর রাসেল রানা। তিনি ডান চোখে দেখতে পেলেও বাম চোখে মোটেও দেখতে পাচ্ছেন না। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না দারিদ্র্য পরিবারটি। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ইউনিয়নের কুমাজপুর গ্রামের মৃত বেলাল হোসেনের ছেলে রাসেল রানা (২৪)।
জানা যায়, গাজীপুর জেলার হাইটেক সিটি হুন্ডাই ফেয়ার টেকনোলজিতে চাকরি করেন রাসেল রানা।
গত ৪ অগস্ট গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এক পর্যায়ে আন্দোলনরত ছাত্র জনতার সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ছোঁড়া ৭ টি রাবার বুলেট রাসেল রানার শরীরে লাগে। গুলিবিদ্ধ রাসেল ছোটাছুটি করলে এক পর্যায়ে তার বাঁ চোখও আত্রান্ত হন। পরে সহপাঠীদের সহায়তায় মির্জাপুর চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর গত ৬ আগস্ট ঢাকা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রাথমিক ভাবে চোখের ছিদ্র অপারেশন করে। পরে ২৫ আগষ্ট চোখের ছানি আপারেশন করা হয়। তার পর ১৮ সেপ্টেম্বর রাসেল রানার বাঁম চোখ থেকে বুলেট বাহির করা হলেও বাঁম চোখ দিয়ে আর দেখতে পায় না। চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাহিরে নিয়ে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
পুলিশের ছোড়া গুলিতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকলেও তার চাকরিটাও চলে যায়। এতে দারিদ্র্য পরিবারটির একমাত্র উপার্জনকারী রাসেল অসুস্থ হয়ে পড়ায় মানবতার জীবন যাপন করছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
রাসেল রানার বৃদ্ধ মা ঝর্না বেগম জানান, আমরা গরিব মানুষ,জায়গা জমি নেই, ছেলের কামাইয়ের উপর আমার সংসার চলতো।ছেলে গাজীপুরে একটা কোম্পানিতে চাকুরী করতো, ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলি রাসেলের বাঁম চোখে লেগে অসুস্থ হওয়ার পর চাকুরীটা চলে গেছে। বিভিন্ন ভাবে ধারদেনা করে ছেলের চোখের চিকিৎসা করাতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। টাকার অভাবে ছেলের বাঁম চোখ ভালো নিভে যেতে বসেছে। এখনও তার চোখের অপারেশন বাকি আছে। ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকার বা বৃত্ত বানদের আর্থিক সহযোগিতার অনুরোধ জানান তার মা। ফোন নাম্বার-০১৩১৬-০৭৬৫০৩ ।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ নাহিদ হাসান খান জানান, এ ব্যাপারে রাসেল রানা আবেদন করেছে, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :