বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল জাতীয় পার্টি। ২৫ অক্টোবর শুক্রবার তাদের রংপুর আগমনকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টি মহানগরের নেতাকর্মীদের ডেকে জরুরি সভা করেছে। আইজিপির সফরসঙ্গী হয়ে সারজিস, হাসনাতের আগমন পুলিশের সঙ্গে জাতীয় পার্টিকে সংঘাতে জড়ানোর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন দলের নেতারা। অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাও জরুরি সভা করেছেন। এ নিয়ে নগরজুড়ে উত্তাপ ছড়িয়েছে।
এরআগে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। এতে ক্ষুব্ধ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নিজ দুর্গখ্যাত রংপুরে তাদের দুজনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। প্রশাসন সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে আনলে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন দলের কো-চেয়ারম্যান ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। আজ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুরে আসবেন পুলিশ প্রধান মো. ময়নুল ইসলাম। আইজিপির সফরসঙ্গী হিসেবে সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহও রংপুরে আসবেন। সকালে তারা আইজিপির সঙ্গে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শাহাদতবরণকারী ও আহত বীরদের সম্মানে উৎসর্গীকৃত সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন। এ লক্ষ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ জাতীয় পার্টির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছিল তাদের রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার। আমি মুখপাত্র হিসেবে সেই ঘোষণা দিয়েছি। সারজিস ও হাসনাত আইজিপির প্রোগ্রামের ছত্রছায়ায় রংপুরে আসার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে দেশে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় কোনো ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি যেন না হয়, সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। সেই সাথে জাপার অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা কেউ যেন এই ইস্যুতে বড় ধরনের ঘটনার জন্ম না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান। আমরা গঠনমূলক আন্দোলন করতে থাকব। আশা করছি, যেকোনো ঘটনা ফেস করার মতো শক্তি ও সক্ষমতা জাতীয় পার্টির রয়েছে। সভা শেষে জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ‘সারজিস তুই আসিস না, পিঠের চামড়া থাকবে না’, ‘রংপুরের মাটি, জাতীয় পার্টির ঘাঁটি’ নানা স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জরুরি সভা করেছেন। সমন্বয়ক ইমরান আহমেদ বলেন, জাতীয় পার্টির বিপরীতে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। আগামীকালের প্রোগ্রাম নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা সেটি সবাইকে জানিয়ে দেব।
আপনার মতামত লিখুন :