আগৈলঝাড়ায় দেড় বছর এর অধিক সময় ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকটে একটি শ্রেণিকক্ষে চলছে ৬টি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েই দীর্ঘদিন যাবত লাইব্রেরিতে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছে।
স্থানীয় ও স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা এলজিইডি বিভাগ থেকে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের পূর্ব গোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ২০২২ সালের ১৭ মে ১ কোটি ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৩২ টাকা ব্যয়ে টেন্ডারটি পান সরদার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কাজ করার জন্য ২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। কাজ শেষ করার জন্য ৯ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও এসময়ের মধ্যে তারা কাজ শুরুই করতে পারেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলজিইডি বিভাগে আবেদন করে তিনবার কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৫ সালের ৩০ মার্চের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য নোটিশ দিয়েছে এলজিইডি বিভাগের প্রধান কার্যালয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন একটি ভবন ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ভেঙ্গে নির্মাণ কাজ শুরু করলেও কাজের ধীরগতির কারণে বর্তমানে কাজের ভিডিও পর্যন্ত আসতে পারেনি। দেড় বছর যাবত পূর্ব গোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি শ্রেণীতে ১ শত ১৮জন শিক্ষার্থীরা দুই কক্ষের একটি ভবনের শিক্ষকদের লাইব্রেরি ও অন্য একটি কক্ষের মাঝে কাপড় দ্বারা বেড়া দিয়ে আলাদা করে দুটি কক্ষে গাদাগাদি করে চারটি শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে।
অন্যদিকে শিক্ষকদের লাইব্রেরির মধ্যে অন্য দুটি শ্রেণীর পাঠদান চলমান রয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের ধীরগতি ও শ্রেণীকক্ষ সংকটের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক মৃনময় গাইন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্তকে জানিয়ে দীর্ঘদিনেও কোনো সমাধান পাননি।
শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অপরদিকে শিক্ষকরা পাঠদান শেষে লাইব্রেরিতে এসে বিশ্রাম নিতে পারছেন না। লাইব্রেরিতে পাঠ গ্রহণকারী ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শ্রাবণী ভদ্র, অঙ্কীতা হালদার, জাহিদ ব্যাপারী, মানিক হালদার ও আয়শা আক্তার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধারে নতুন ভবনের কাজ শেষ না হওয়ার কারণে আমরা গাদাগাদি করে স্যারদের কক্ষে একাধিক শ্রেণীর ক্লাস করছি।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনময় গাইন বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যদি সঠিক সময়ে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করতো তাহলে আমাদের শিশুদের পাঠদান করাতে ভোগান্তির শিকার হতে হত না। পাঠদান করানোর কোন কক্ষ না থাকায় একই কক্ষে এবং লাইব্রেরিতে একাধিক শ্রেণীর পাঠদান করানো হচ্ছে।
কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার জয়দেব রায় বলেন, টেন্ডারের সময় নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য কম ছিল। পরে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ শুরু করতে একটু দেরি হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও পূর্ব গোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি নাদিরা আফরিন বলেন, আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে শ্রেণীকক্ষ সংকটের কথা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানাই। শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত ঠিকাদারকে ডেকে দ্রুত ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।
আপনার মতামত লিখুন :