রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সাগর মিয়া, হোসেনপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

বিজয় মিছিলে বড় ছেলের মৃত্যু, ছোট ছেলের ক্যান্সার, শোকস্তব্ধ পরিবার

সাগর মিয়া, হোসেনপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম

বিজয় মিছিলে বড় ছেলের মৃত্যু, ছোট ছেলের ক্যান্সার, শোকস্তব্ধ পরিবার

বামে বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ, ডানে ছোট ছেলে মাহমুদুল্লাহ বিন জাহিদ। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জাহেদুল ইসলাম সোহরাব ও ফাতেমাতুজ জহুরা দম্পত্তি। দীর্ঘদিন ধরেই বসবাস করছেন ঢাকায়। দুই ছেলেকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার। ঢাকাতেই দুই ছেলেকে লালন-পালন করে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পুমদী ইউনিয়নের বর্শিকুড়া গ্রামে।

তাদের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ ছিলেন ১৭ বছরের এক টগবগে যুবক। ঢাকার শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের বাণিজ্য বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মা-বাবার বারনকে উপেক্ষা করেই লুকিয়ে অংশগ্রহণ করতো মিছিল-মিটিংয়ে। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে গেলে বিজয় মিছিলে বের হয়েছিলো সে। মা কে না বলেই দুপুরে খাবার খেয়ে বের হয়ে পড়েছিলো বিজয়ের আনন্দে ভাগ বসাতে!  কিন্তু হঠাৎ একটি সংবাদ যেন সুখী পরিবারটিকে স্তব্দ করে দেয়। উত্তরায় বিজয় মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ। পরে, স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হঠাৎই বড় ছেলের মৃত্যুর সংবাদে তাদের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।

বড় ছেলেকে হারিয়ে মা ফাতেমাতুজ জহুরা ও পিতা জাহেদুল ইসলাম সোহরাব প্রায় পাগল হয়ে যান। কোনোভাবেই থামে না তাদের শোক! পরের দিন সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার বর্শিকুড়ায় বড় ছেলের লাশ দাফন করা হয়।

এভাবে সময় যেতে লাগলো। শোকে আচ্ছন্ন পরিবারে আরেকটি ধাক্কা নেমে আসে যখন খবর আসে যে তাদের ছোট ছেলের ক্যান্সার! ছোট ছেলে মাহমুদুল্লাহ বিন জাহিদ সপ্তম শ্রেণিতে পড়েন। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।

বিজয় মিছিলে বড় ছেলের মৃত্যু, ছোট ছেলের ক্যান্সার‍‍` পরিবারটি আর যেন সইতে পারছে না। বাবা জাহেদুল ইসলাম সোহরাব গার্মেন্টস এক্সোসারিজ সাপ্লাই এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল-এর চাকুরী করতেন। বর্তমানে তিনি বাড়িতে বসবাস করছেন। মা ছোট ছেলেকে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে ব্যস্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জিত চন্দ্র শীল জানান, ৬ তারিখ সন্ধ্যায় তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। ঢাকার উত্তরায় বিজয় মিছিলে গিয়ে গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।

রবিবার তাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের পিতা জাহিদুল ইসলাম সোহরাব বাড়ির পাশের একটি দোকানের সামনে বসে আছেন। চোখে মুখে চিন্তার ভাজ৷ বড় ছেলের কথা বলতেই তার চোখের কোণে পানি টলমল করতে লাগলো। মোবাইল ফোনে ছেলের ছবি দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ সময় তিনি বলেন, দুপুরে বাসায় ভাত খেয়ে সে বিজয় মিছিলে বের হয়। তারপর খবর আসে তার গলায় গুলি লেগেছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি বড় ছেলে আর নেই। 

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। তাকে কেন জীবন দিতে হলো? আমার ছোট ছেলেটার ক্যান্সার ধরা পড়লো। এক পর্যায়ে তিনি করুন সুরে বলেন,‍‍`আমি সইতে পারছি না!‍‍`

হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মন্ডল জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে নিহতের তথ্য পাঠানো হয়েছে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!