জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পূর্বেই সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের কাছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওএমআর দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পূর্বেই প্যাকেজিং এর সময় সাবেক উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখরের কাছে এবং ভিসি দপ্তরে ২০টিরও অধিক ওএমআর শিট দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কমিটির একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ১৭ অক্টোবর ভিসি বাংলো থেকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের যাবতীয় সরঞ্জামাদি পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় সৌমিত্র শেখরের ব্যক্তিগত শয়নকক্ষে সন্ধান মিলেছে একাধিক ওএমআর শিট, শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগের নথিপত্র এবং প্রার্থীদের তালিকাও, যা সংরক্ষিত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সূত্রমতে, কমিটির সদস্যরা শুধুমাত্র রুম প্রতি ওএমআর প্যাকেজিং করতেন। বাকি যাবতীয় হিসাব রাখতেন কমিটির সদস্য সচিব মাসুদ রানা। তিনি একদিন এসে উপাচার্যের কথা বলে ওএমআর নিয়ে গেছেন। পরীক্ষার হল থেকে ফেরত আসা ওএমআরগুলো কোথায় সেগুলোর তথ্যও নেই কারো কাছে।
তবে ২০টি নয় বরং ৩ থেকে ৪ টি ওএমআর কন্ট্রোল রুমে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোল্লা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্বে থাকেন। এছাড়াও কয়েকজন ফোকাল পয়েন্টের অধীনে সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। ওএমআর প্যাকেজিং এর সময় ৩-৪ টা বাড়তি দেওয়া হয়েছে কন্ট্রোলরু মে। কিন্তু ভিসি স্যারের বাংলোতে ওএমআর কিভাবে গেলো সে বিষয়ে অবগত নই।
ভিসির বাসভবনে ওএমআর পাওয়ার বিষয়ে সদস্য সচিব মাসুদ রানা বলেন, আমি এটি জানি না। আমাদের কাজ হলো ওএমআর নিয়ে রুমপ্রতি ভাগ করে দেয়া। যেসকল ওএমআর অব্যবহৃত থাকে, সেগুলো একসাথে সেন্ট্রালে পাঠানো হয়। আমার কাছে এর কোনো হিসাব নেই।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের ঘটনা ন্যাক্কারজনক। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই বিষয়টি তদন্ত করে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে প্রশাসন অবগত রয়েছে। ভিসি বাংলো থেকে পাওয়া সাবেক উপাচার্যের অফিসিয়াল নথিপত্র সংরক্ষিত রাখা আছে। বিষয়টি প্রমাণ সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় ভর্তি-বাণিজ্য এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ লেনদেন ও দুর্নীতির অভিযোগে অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।