প্লাস্টিক সামগ্রির দাপটে চারুশিল্পের চাহিদা দিন দিন কমে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্পের ব্যবহার। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে কারিগররা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রসিদ্ধ কারিগররা তাদের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য বাপ-দাদার রেখে যাওয়া পেশা ছেড়ে দিয়ে বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন পেশা। যার ফলে, বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসের প্রতি মানুষ দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বাঁশ ও বেত শিল্পের সুনাম দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ছড়িয়ে রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া, শিয়ালমারী, উথলী, তেতুলিয়া ও বাড়ভাঙ্গা গ্রামের প্রায় ৮শ পরিবার বেত ও বাঁশ শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।যারা বাঁশ দিয়ে তৈরি করে চাটাই, ঝুড়ি, কুলা, টুকা, ডালা, পেছে, চালুন, খাঁচা, মোড়া, খারইসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করতো। এ সব পণ্য স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও বাজারজাত করা হতো। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে বেত ও বাঁশ শিল্পের চাহিদা প্রায় বিলুপ্তির পথে।
এই পেশার সঙ্গে জড়িত শরিফুল, শহিদুল ইসলাম, সামাদ, ছলেমান, সুনীল দাস, জিতেন্দ্র নারায়ন, মন্টু, আরিফুলসহ বেশ কয়েক বলেন, বর্তমানে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় এবং বাজারে বাহারী ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে বাঁশ ও বেত শিল্পের ব্যবহারের বেহাল দশা।
জিতেন্দ্র নারায়ন বলেন, পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন অটো ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। আমাদের গোত্রের ২/৩টি পরিবার ছাড়া সবাই পেশা পরিবর্তন করেছেন। এক সময় পল্লীতে বাঁশ ও বেত ঝাঁড় থাকায় বাঁশের তৈরি শিল্পের প্রচুর ব্যবহার ছিল। কিন্তু আগের মতো এখন বাঁশ ঝাড় আর বেত চোখে পড়ে না। এর দুষ্প্রাপ্যতার কারণে একদিকে যেমন গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকা শক্তি কুটির শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি নিঃস্ব হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী পরিবারগুলো।
আপনার মতামত লিখুন :