কোয়েল পাখি পালন করে সাড়া ফেলেছেন মাহমুদ শরীফ। পারিবারিক পুষ্টি এবং আমিষের চাহিদা পূরণ করে আর্থিকভাবে লাভবানও হচ্ছেন তিনি। শিক্ষকতার পাশাপাশি কোয়েল পাখি পালন করেন তিনি। সকালে ও রাতে খামারে কোয়েল পাখির পরিচর্যা করেন এই সৌখিন খামারী।
জানা গেছে, মাহমুদ শরীফ প্রায় এক যুগ ধরে কোয়েল পাখি পালন করে আসছেন। কুমারখালীর যদুবয়রা গড়াই সেতু সংলগ্ন কেশবপুরের লালন বাজার এলাকায় নিজ বাড়ীতে এই খামারটি কোয়েলের বাড়ী বলে পরিচিতি পেয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে কোয়েল ক্রয় ও পরামর্শ নিয়ে ছুটে আসে অনেক উদ্যোক্তারা।
আরো জানা গেছে, ২০০৫ সালে একটি প্রতিবেদন দেখে তিনি সর্বপ্রথম কোয়েল পাখি সম্পর্কে অবগত হন। এর পর ঢাকায় প্রথম কোয়েলের ডিম দেখেন ও খেয়ে স্বাদ নেন। তখন থেকেই কোয়েল পালনের চিন্তা আসে তার মাথায়। অবশেষে একটি খামার থেকে মাত্র ২০টি কোয়েলের বাচ্চা নিয়ে এসে তিনি নিজের খামার শুরু করেছিলেন ২০১১ সালে। এর থেকেই বাস্তব অভিজ্ঞতা নেন তিনি। খাদ্য ব্যবস্থাপনা, ওষুধ, রোগ-বালাই, মোরগ-মুরগী চিহ্নিত করা, ডিম ফুটানো, হ্যাচিং, লিটার ব্যবস্থাপনাসহ কোয়েল পাখি পালনের সব বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে খামারী মাহমুদ শরীফের। তিনি জানান পারিবারিক আমিষের পুষ্টি মেটাতে আর ভালোলাগার থেকে কোয়েল পালন করছি। শিক্ষকতার মাঝে এই পাখি পালনে তেমন সমস্যা, কষ্ট বা অসুবিধা নেই। সকালে ও রাতে মাত্র দুইবার খাদ্য ও পানি দিতে হয়। সন্ধায় ডিম সংগ্রহ করা আনন্দের কাজ। যে কেউ বাসা-বাড়ীতে সহজেই এই কোয়েল পালন করতে পারে। শিশুরা কোয়েলের ডিম আগ্রহের সাথে খায়। কোয়েলের মাংশেরও আলাদা টেষ্ট আছে।
সৌখিন কোয়েল খামারী মাহমুদ শরীফ আরো বলেন, কোয়েলের খাদ্য প্রতিদিন ১৫-২৫ গ্রাম প্রয়োজন হয়। খাদ্যে কার্পন্ন করলে ডিম উৎপাদন ও বৃদ্ধিতে ব্যঘাত হয়। ৩৫ দিনে মোরগ পাখি খাওয়ার উপযোগী হলে বিক্রি করি। ৪২-৬০ দিনে মুরগী ডিম দেওয়া শুরু করে। শীতকালে ডিমের চাহিদা বেশি থাকে। পাইকারী হিসেবে ৩০০-৩২০ টাকায় ১শ ডিম বিক্রি হয়। মোরগ কোয়েল মাংশের জন্য বয়স ভেদে ৪৫-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। অল্প পুঁজি অল্প লাভ মনে করে শুরু করতে হবে। বাজারজাত করার বিষয়টি সবার আগে মাথায় রাখা জরুরী। স্থানীয় বাজারে ব্যাপকভাবে কোয়েল খাওয়ার প্রচলন এখনো শুরু হয়নি। তাই ভেবে চিন্তে খামার করা উচিৎ। তবে পারিবারিক পুষ্টির জন্য হলে কোন সমস্যা নেই। কোয়েলের রোগবালাই নেই বললেই চলে। পোল্ট্রি শিল্পের এই ক্ষুদ্র খাত টিকিয়ে রাখতে রেডি ফিডের মূল্য কমানো এখন জরুরি। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও ৫০-১০০ কোয়েল পাখি পালন করে সহজেই তার নিজের খরচ চালিয়ে যেতে পারে। খাচা ও লিটার দুই পদ্ধতিতে কোয়েল পালন করা যায়। অল্প জায়গাতে খাচায় পালন করা যায়। এই শিল্পে বাটপারীও কম হয়না বলেও তিনি সতর্ক করেন। বিশেষ করে অনলাইনে বাটপারী বেশি হয়। কোয়েল পাখির বয়সের ক্ষেত্রে মিথ্যার সুযোগ নেয় অনেকেই। তাই, নতুনদের আর্থিক লেনদেনে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :