শান্ত স্বভাবের ছিলেন ফুলবানু। পারিবারিক কলহ আর সন্দেহের জেরে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মধ্যরাতে চাঁন মিয়ার সঙ্গে স্ত্রীর ঝগড়া হয়। পাষণ্ড স্বামী নিজের পরণে থাকা গেঞ্জি ফুলবানুর গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে খুন করে। ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে ঘরের তীরের সঙ্গে মরদেহের গলায় শাড়ী দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মানিকদীপা পদ্মপাড়ার এই ঘটনার ১৯ বছর পর খুনি স্বামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বগুড়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ বিচারক জালাল উদ্দিন। দীর্ঘ ১৯ বছর শুনানি শেষে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেন বিচারক। দণ্ডিত চাঁন মিয়া শাজাহানপুর উপজেলার মানিকদীপা পদ্মপাড়ার চুন্নু মিয়ার ছেলে।
বগুড়ার কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিজেদের শোবার ঘরে স্ত্রী ফুলবানুর সাথে স্বামী চাঁন মিয়ার ঝগড়া হয়। তার পরনে থাকা গেঞ্জি খুলে স্ত্রীর গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে খুন করে৷ এরপর ফুলবানুর পরনে থাকা শাড়ী খুলে গলায় পেঁচিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজান। স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা এবং লোক দেখানো কান্নাকাটি করে।
কোর্ট ইন্সপেক্টর আরও জানান, ঘটনার পরদিন সকালে ফুলবানুর আত্মহত্যার খবর শুনে ঘটনাস্থলে যান বাবা আব্দুর রাজ্জাক। কন্যাকে খুনের পর ঝুলিয়ে রেখে নাটক সাজানোর বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে প্রাথমিকভাবে খুন সন্দেহ হলে স্বামী চাঁন মিয়াকে আটক করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর স্ত্রীকে খুনের দায় স্বীকার করে পাষণ্ড স্বামী। এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত ফুলবানুর বাবা আব্দুর রাজ্জাক। খুনের মামলায় চান মিয়াকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দেয় পুলিশ। ১৯ বছর পর মামলার সকল কার্যক্রম শেষে রায় দেন আদালত।