সবুজ পাতার ফাকে ফাকে ঝুলে আছে চিকুন সাপের মত সজিনা। শীতকালীন সবজি সজনে হলেও এটি ফলবে এখন সব মৌসুমে। যশোরের চৌগাছায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বারোমাসি সজনে। পুষ্টি ও ওষুধি গুণ থাকায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার সজনে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ফলন ভাল হওয়ার পাশাপাশি দাম বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা গ্রামের কৃষক আক্তার হোসেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুণাগুন ও চাহিদার কথা জেনে আগ্রহী হন সজনে চাষে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জেলা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে চারা নিয়ে শুরু করেন ওডিসি-৩ জাতের সজনে চাষ। ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ১ বিঘা জমিতে ৩শ চারা রোপন করেন। বর্তমানে প্রতি গাছে ফলন পাচ্ছেন ৮ থেকে ১০ কেজি। এই মৌসুমে ২ থেকে ৩ লাখ টাকার সজনে বিক্রির আশা আক্তার হোসেনের।
আক্তার হোসেন বলেন, ‘সজনে চাষি চারা ও লেবার খরচ দিয়ে আমার ১৫ থেকে ২০ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে আমরা খরচ উঠে গিয়েছে।’ সম্ভাবনা থাকায় সজনে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। আকারে লম্বা ও অসময়ে হওয়ায় ১২ মাসি এই সজনের চাহিদা বেশি থাকায় দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা। পাইকারিতে প্রতিকেজি সজনে
বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।
সজনে চাষি রেজাউল করিম বলেন, ‘৯ থেকে ১০ মাসে আমার বিক্রি হয়েছে ৪০ হাজার টাকার মতো। এবছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা পাবো বলে আশাবাদী।’ ওডিসি-৩ জাতের সজিনা দীর্ঘদিন ফলন দেয়। পুষ্টি ও ওষুধি গুণের কারণে বাজারে এর চাহিদাও বেশি। সরকারি সহায়তা পেলে এখানকার সজনে রপ্তানি করাও সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক প্রতাপ মন্ডল বলেন, ‘আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে বিদেশি রপ্তানি করবো।’
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ দীপংকর দাশ বলেন, ‘ওডিসি-৩ জাতের সজিনা সারা বছরই উৎপাদন করা যায়।’ বাজারে ভাল দাম থাকায় এর চাহিদাও রয়েছে। আমরা কৃষকদের চারা ও চাষ পদ্ধতি দিয়ে সহযোগিতা করছি। হর্টিকালচার সেন্টার থেকে গেল বছর প্রায় ৭ হাজার চারা উৎপাদন করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৬ হাজার চারা নিয়েছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি ফলন হবে। এক্ষেত্রে কৃষকরা লাভবান হবেন।
যশোরের চৌগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার সমরেন বিশ্বাস বলেন, ‘সজিনার পাতা শুকিয়ে গুড়া করে বিক্রি করা যাবে ও বাজারে কাঁচা পাতা সবজি আকারে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবে।’
আপনার মতামত লিখুন :