ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে পেটালেন এ্যাসিল্যান্ড

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৪, ০৭:১৮ পিএম
সহকারী কমিশনার ভূমি (এ্যাসিল্যান্ড) আবু বক্কর ছিদ্দিক। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শরীয়তপুরে এক ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে নিজের অফিস কক্ষে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি (এ্যাসিল্যান্ড) আবুবক্কর ছিদ্দিক এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের মডেরহাট বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মো. সোলাইমান তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে ডামুড্যা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি আবু বকর সিদ্দিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য তার দোকানে যায়।

এসময় তিনি তার দোকানের লাইসেন্স দেখতে চাইলে সোলাইমান তা দেখাতে না পারায় ভ্রাম্যমান আদালত তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করলে, ব্যবসায়ী সোলাইমান বাকবিতন্ডায় জড়ালে এক পর্যায়ে এ্যাসিল্যান্ড তাকে গাড়ীতে তুলে ডামুড্যা উপজেলায় তাঁর অফিস কক্ষে নিয়ে এসে, প্রথমে আনসার দিয়ে পরে তিনি নিজেই বেধড়ক পেটান এবং কান ধরে ওঠবস করান।

এসময় ঘটনা স্থলে থাকা ডামুড্যা পৌর জামায়াতের আমির আতিকুর রহমান কবির, উপজেলা আমির মাওলানা সাইফুল ইসলাম ও নিউনেস ইসলামি একাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সাইফুল ইসলামকে লক্ষ করে বলেন ভিডিও করেন।

এ ঘটনায় ব্যাবসায়ী সোলাইমান বলেন, আমি অন্যায় করলে তিনি আমাকে জেল-জরিমানা করতে পারেন, তিনি তো এতো গুলো মানুষের সামনে আমাকে এ ভাবে পেটাতে পারে না। তিনি আমাকে পিটিয়ে আমার শারিরিক ও মানসিক ভাবে আহত করেছেন। আমি এর উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে ডামুড্যা পৌর জামাতের আমির আতিকুর রহমান কবির বলেন, মধ্য বয়েসের একজন ব্যবসায়ীকে সামান্য বিষয় নিয়ে এভাবে পেটানো খুবই দুঃখ জনক। জনগনের সেবক যদি পেটোয়া হয় তাহলে মানুষ তার নিকট থেকে কি ধরনের সেবা পাবে? এর বিচার হওয়া দরকার।

নিউনেস ইসলামি একাডেমির প্রধান শিক্ষক ও  হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হয়ে সাধারণ নাগরিকের উপর নির্দয়ভাবে পেটানোর বিষয়টি আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাছাড়া আমরা তিন ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিলাম, তিনি আমাদের সম্মানের কথা চিন্তা করে হলেও এ জঘন্যতম কাজটি না করলেও পারতেন। এ ঘটনায় আমি তার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।

ডামুড্যা উপজেলা জামাতের আমির মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার চল্লিশ বছর বয়সের মধ্যে এমন ঘটনা দেখিনি ও শুনিনি। তিনি প্রকাশ্যে দিবালোকে আমাদের সামনে নির্দয়ভাবে সোলাইমানকে পিটিয়ে আহত করেন। উপজেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হয়ে তিনি এ কাজ কিভাবে করলেন তা আমার বুঝে আসে না। তবে আমি এর বিচার দাবি করছি।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, এসিল্যান্ড আবু বকর সিদ্দিক মুঠোফোনে বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার সকালে ধানকাটি ইউনিয়নের মডেরহাট বাজারে গিয়েছি এবং এক ব্যাবসায়ীকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছি। তাকে গাড়ীতে তুলে অফিসে এনে পেটানোর কথা জিজ্ঞেস করলে, সে তা অস্বীকার করেন।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হলাম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।