ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৪

তজুমদ্দিনে মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

আবদুল মান্নান, তজুমদ্দিন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৪, ০৬:০১ পিএম

তজুমদ্দিনে মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

শম্ভুপুর ইউনিয়ন গোলকপুর এলাকা। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার খোলা মাঠে দিগন্তজুড়ে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন, কৃষকের রক্তপানি করা ক্লান্তিমাখা জীবনের স্বপ্ন, সবুজে ঘেরা সোনালি ধানের শীষ। প্রতিটি ধান খেতে ধানের শীষ উঁকি দিচ্ছে। ইতিমধ্যে ধানের সবুজ চারা এবং কাঁচা শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে। এরপর সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষাণ-কৃষাণীর শূন্য গোলা। আর তাইতো এই রোপা-আমন ধানকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। আর কয়েকদিন পরেই ঘরে উঠবে পাকা ধান। এখন ধুধু
চোখে নজর কাড়ছে আমন ধানের ক্ষেত। মাঠের চারিদিকে সবুজের ভিরে সোনালি রংয়ের সমারোহ।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে তজুমদ্দিন উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়েছে। এরিমধ্য বিআর-১১,২২,ব্রিধান-৫২,৮৭, মোট ১১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধানের চাষ হয়েছে। এবছর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১১ হাজার ৮ শত ৬০ হেক্টর। শম্ভুপুর ইউনিয়ন ১ হাজার ৪ শত ৯০ হেক্টর,চাদঁপুর ইউনিয়ন ৩ হাজার ৩ শত ৩০ হেক্টর, চাঁচড়া ইউনিয়ন ৩ হাজার ৮ শত ৫০ হেক্টর, সোনাপুর ইউনিয়ন ২ হাজার ৪ শত ২০ হেক্টর, মলনচড়া ইউনিয়ন ৮ শত ১০ হেক্টর।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সোনালী ধানের শীষে সকালে কুয়াশার টগবগে বিচরণ দুপুরে সূর্যের সোনালি রোদ যেন খেলায় মেতেছে। কৃষাণ-কৃষাণিদের মনে বইছে আনন্দ আর মুখভরা হাসি। গত বছরের চেয়ে এ বছর আমন ধানে কৃষকের কাঙ্খিত স্বপ্নের এ ক্ষেতে আশাতীত ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বিভিন্ন প্রকার দুর্যোগ পোকা মাকড়ের উপদ্রপে একাধিকবার দিতে হয়েছে কীটনাশক, বেড়ে গেছে উৎপাদনের খরচ।

উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের কৃষক জামাল উদ্দিন জনান, এবছর আমি ১২০ শতাংশ জমিতে রোপা-আমন চাষ করেছি, রোপণের প্রথম দিকে ঝর বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও পরবর্তীতে কৃষি অফিসের পরামর্শে এবং পরিচর্যার মাধ্যমে ফসল ভালো হয়েছে। মাঠে কিছু জমির ধান ফুলে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে, আবার কিছু জমির ধান কেবল ফুলছে। তবে আর মাত্র কদিন পরেই মাঠের অধিকাংশ ধান পাকতে শুরু করবে।

চাঁদপুর ইউনিয়নের কৃষক সুমন জানান, গত বছরের তুলনায় এবারে ধান ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপদ্রপ বেশি ছিল। এতে কীটনাশক দিতে হয়েছে চার থেকে পাঁচবার। তারপরও আশানুরূপ ফলন ঘরে তোলা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

চাচঁড়া ইউনিয়নের দিঘলাকান্দি এলাকার কৃষক মো.কাদের জানান, এবার গত বছরের চেয়ে বিঘায় দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেশি খরচ হবে। তবে ধানের বাজার চড়া থাকায় লাভবান হবার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক।

তজুমদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হুদা জানান, চলতি বছরে এখনো পর্যন্ত কৃষকদের ধান ভালো পর্যায়ে আছে। অফিস থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা সঠিক সময় ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছি।

আরবি/জেডআর

Link copied!