জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চাঁনপাড়া থেকে নিশ্চিন্তা আঞ্চলিক সড়কের পার্শে অবস্থিত সাথী হিমাগার লিমিটেড-৩। গত বছর অত্র অঞ্চলের সর্বাধিক ধারণ ক্ষমতা সম্পূর্ণ হিমাগারটির নির্মাণ কাজ সম্পুর্ন করার পরে কৃষকদের আলু সংরক্ষণের জন্য বুকিং কার্যক্রম চালু করে। নতুন হিমাগারে আলুর মান ভালো পাওয়ার আশায় প্রান্তিক কৃষকের পাশাপাশি মৌসুমী আলু ব্যবসায়ীরা বীজ আলু ও খাওয়া আলু মজুদ রাখেন হিমাগারটিতে।
চলতি মৌসুমে আমন ধান কর্তনের পরে উক্ত জমিতে আগাম আলু রোপনের জন্য হিমাগারে রাখা আলু নিতে হিমাগারে ভীড় জমিয়েছেন কৃষকরা। তবে হিমাগারে রাখা আলু নিতে এসে নানামূখী ঝামেলায় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদেরকে।
কৃষকদের অভিযোগ, হিমাগারে রাখা আলু সম্পূর্ন পাওয়া যাচ্ছে না। আর কর্তৃপক্ষ বলছেন স্বল্প জনবল ও কৃষকদের অতিরিক্ত ভীড়ের কারণে এমন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলুর কার্ড হাতে শতাধিক কৃষক হিমাগার চত্তরে আলু নিতে এসে দাঁড়িয়ে আছে। এসময় জয়পুরহাট সদর উপজেলার বাঁকিলা গ্রামের আব্দুল আহাদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সাথী হিমাগারে ৭৮৪৪/ ১৩ লটে ৬ বস্তা আলু ১ মাস আগে উঠানো হয়েছে। বাকি ৭ বস্তার ডিও করা হয়েছে (২২ অক্টোবর) সমুদয় টাকা দিয়ে। কিন্তু আলু পেয়েছি ৪ বস্তা বাকি ৩ বস্তা হারিয়ে গেছে। এ ছাড়া ৭৮৪৩/২৬ লটের ২ বস্তা হারিয়ে গেছে।
উপজেলার ছাতিনালি গ্রামের নজরুল ইসলাম ও কালাই হাতিয়ার গ্রামের মকবুল হোসেন সহ অনেক কৃষকের আলুর বস্তা খুঁজে পাচ্ছেন না।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ হারিয়ে যাওয়া আলুর বস্তা ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আলু পাচ্ছেননা বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা।
এ ছাড়া ৫ দিনেও পিসিতে আলু না আসা, আলুর কার্ড ডিও করে রিসিভ নিয়ে গড়িমসি করে সময় ক্ষেপন করাসহ বস্তায় আলু কম থাকার অভিযোগ তুলেছে কৃষকরা।
উপজেলা নন্দিগ্রামের মান্নান বলেন, ১১ বস্তা আলুর মধ্যে ২ বস্তায় ( প্রতি বস্তায় ৬২ থেকে ৬৫ কেজি রেটে) লাল পাকড়ি ১ টায় ৩৭ কেজি হয়েছে অপর টায় ৩৯ কেজি হয়েছে।
এ বিষয় নিয়ে হিমাগারের গেটম্যান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, অপেক্ষা করেন, বিষয় টা সমাধান করা হবে।
উপজেলার বরণ ছেলোবেলো গ্রামের আ: হাকিমসহ একই গ্রামের আ: মজিদ ও মোকলেছ বলেন, নতুন স্টোরে মেশিন পত্র ভালো হবে তাই ভেবে আলু থুইচোনো বা (রেখেছিলাম) কিন্তু এটকার(এখানকার) কর্মচারীরা যা শুরু করিছে আলু ডিও করিচি এই মাসের ২ তারিখে ( ২ নভেম্বর) আজ দেওয়ার কথা। সকাল থেকে বসে রাখিচে। গাড়ি ভাড়া করে লিয়াইচি( নিয়ে এসেছি) বর্ডার এলাকার মানুষ যাতে যাতে ( যেতে যেতে ) রাত হয়ে যাবে আগে জানলে আলুই থোনুনা হুনি (রাখতম না)।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সাথী হিমাগার লিমিটেড-৩ এর ব্যাবস্থাপক মো: মোস্তাফিজার রহমানের থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব সমস্যা সব জায়গায়,শুধু আমার এখানেই না। এসব সমস্যা সব স্টোরেই হয়। েআর যাদের আলু হারিয়ে গেছে তারা খাওয়া আলু রাখলেও এখন বলছে বীজ আলু। কৃষকরা কেন আলু রাখার সময় আলুর কার্ডে খাওয়া বা বীজ আলু উল্লেখ করলনা।
তিনি আরও বলেন, প্রথমত আমাদের এখানে জনবল কম, এর পরে কৃষকের ব্যাপক চাপ, আমরা সব মিলিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।
হারিয়ে যাওয়া আলুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, কারো আলুই মার যাবে না । হয়ত কিছু সময় লাগবে । তবে এসব আলুর দায়ভার স্টোর মালিক নেবেন না। দায় আমাদের কে নিতে হবে বলে তিনি মতামত প্রকাশ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :