জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের কাঁচাবাজার ব্রিজের পূর্ব পাশে তুলশী গঙ্গা নদীর পাড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব সূর্য (ছট) পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবছর হিন্দু বর্ষপঞ্জীর কার্তিক মাস বা কখনও কখনও অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে সন্ধ্যায় ও সপ্তমীর ভোরের অর্ঘ্যে উদযাপিত হয় হিন্দুদের প্রাচীন এ ছট পূজা পার্বণ। এ উপলক্ষে বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপবাস থেকে বিভিন্ন রকম ফল-ফলান্তি, ঠেকুয়া, দূধ, প্রদীপ নিয়ে হাজির হয় নদীর পাড়ে। নদীর পানিতে ভেজা কাপড়ে বুক পর্যন্ত দাড়িয়ে তারা মাতা ছটের কাছে সন্তান ও পরিবারের পূণ্যের আশায় ব্রত পালন করেন।
বৃহস্পিতার (০৭ নভেম্বর) সূর্যাস্তের আগে উপবাস কারিরা নদীতে নেমে সূর্যাস্তের পরে দূধ জল দিয়ে পূজা অর্চনার মাধ্যমে প্রার্থনা শেষে স্নান করে উঠে আসেন। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ভোরে সূর্যোদয়ের পূর্বে পানিতে নেমে এবং সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ফল-ফলান্তি, ঠেকুয়া, দূধ, প্রদীপ, ফুল, জল দিয়ে নদীতে সূর্য দেবতার পূজা অর্চনা করেন। পূজা উপলক্ষে তুলশী গঙ্গা নদীর পাড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ছোট-বড়দের মিলনমেলায় পরিণত হয়। অপরদিকে তাদের পূজা দেখতে নদীর উভয় পাড়ে এবং ব্রিজের উপরে হাজারো দর্শকরা ভিড় জমায়।

আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিত্য চৌধুরী বলেন, ছট পূজাটি মূলত ভারতের বিহার, ঝাড়খন্ডসহ বিভিন্ন প্রদেশে প্রচলিত আছে। এই ছট পূজা অর্চনার জন্য উপবাস কারি ও ভক্তবৃন্দের নদীর পাড়ে আসার কোনো রাস্তা নেয় এবং পূজার দিন পৌরসভা থেকে কোন আলোর ব্যবস্থা না থাকায় খুব কষ্টে নদীর পাড়ে আসতে হয়।
সুকুমার সাহা বলেন, প্রভু রাম যখন তাঁর বনবাস শেষে অযোধ্যায় ফিরে আসেন। মা সীতা দেবী প্রভুর দীর্ঘায়ু কামনার জন্য এই ব্রত রাখেন। এ উপলক্ষ্যেই সনাতন ধর্মের প্রত্যেক মা সন্তানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনার জন্য এ ব্রত রেখে ছট মাতার প্রতি উৎসর্গ করেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ উপজেলা শাখার সভাপতি ওমপ্রকাশ আগরওয়ালা বলেন, ছট পূজা যুগ যুগ থেকে হয়ে আসছেু। পরম্পরায় তুলশী গঙ্গা নদীর পাড়ে সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষরা ছট মাতা’র কাছে পানিতে নেমে তাদের আশা পূরণের লক্ষ্যে প্রার্থনা করেন। এ ব্রত পালনে উপবাস কারিরা প্রায় ৪৮ ঘন্টা উপবাস থাকেন।
আপনার মতামত লিখুন :