সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে বাজার গুলোতে কমতে শুরু করেছে বেশিরভাগ শাক-সবজির দাম। তবে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। শনিবার (৯ নভেম্বর) শরীয়তপুর পালং ও আংগারিয়া এবং ডোমসার বাজার সহ জেলার বিভিন্ন বাজারগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজি। দোকানগুলোতে শীতের সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। এতে বাজারে কমতে শুরু করেছে অস্থিরতা। সপ্তাহ ব্যবধানে দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। সরবরাহও বেশ ভালো, তাই দাম কমছে। তবে সামনে কোনো সংকট না দেখা দিলে দাম চলে আসবে সকলের হাতের নাগালে।
ডোমসার বাজারের সবজি বিক্রেতা রহিম মাদবর বলেন, সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কমতে শুরু করেছে শীতের সবজির দাম। সরবরাহ ঠিক থাকলে সামনে আর দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। বরং আরও কমবে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ৩৫-৪০ টাকা, লতি ৬০-৭০ টাকা, কহি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা ও পটোল ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এছাড়া, প্রতি কেজি ধনেপাতা ১৩০-১৪০ টাকা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ৪০-৮০ টাকা।
এদিকে, নিম্নমুখী শাকের বাজারও। লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫-২০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, ডাঁটাশাক ১৫ টাকা, কলমিশাক ১০-১৫ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কমায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে কাচা বাজারে। তবে মনিটরিং অব্যাহত রাখলে দাম আরও কমে আসবে। শরীয়তপুরের পালং বাজারে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, শীতের সবজি আসতে শুরু করায় অনেকটাই কমে এসেছে শাক-সবজির দাম। সরকার মনিটরিং বজায় রাখলে বাজার ক্রেতাদের নাগালে রাখা সম্ভব।
বাজারে মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। প্রতি কেজি রুই ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
আর খুচরা পর্যায়ে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ কেজি হারে বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৩০০ টাকায়, আর এক কেজি ওজনের ১৬০০-১৭০০ টাকায়। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪০০-১৫০০ টাকা হারে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ১১০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতারা বলছেন, প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই দাম এখনো বাড়েনি। সরবরাহ অনুযায়ী ইলিশের দাম ওঠানামা করে।
বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের দাম। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-২০০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা। এছাড়া, জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকায়।
মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকায় নতুন করে বাড়েনি দাম। তবে সামনে বিয়ের মৌসুম আসছে। সে সময় কিছুটা বাড়তে পারে মুরগির দাম।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান। আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
আপনার মতামত লিখুন :