লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান ওরফে হুন্ডি সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের লালমনিরহাট-ঢাকা মহাসড়কের তিস্তা সেতুর টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম ফজলুল হক। তিনি বলেন, সোমবার রাতে কুড়িগ্রাম থেকে একটি স্লিপার বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে পালাচ্ছে সুমন খান এমন একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল তিস্তা টোল প্লাজায় চেকপোস্ট বসায়। এসময় কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ‘এসএন’’ স্লিপার কোচের একটি বাস থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
জানা গেছে, গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই সুমন খান আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর থেকে তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। লালমনিরহাট জেলা শহরে তার এক আধিপত্য নৈরাজ্যের প্রভাব বিস্তার ছিল। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিগত ১৫ বছরে তিনি টেন্ডার বানিজ্য, হাট বানিজ্য, চাঁদাবাজি, জমিদখল, হুন্ডি ব্যবসা, গরু চোরাচালান সহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে ছিলেন। গত ৩১ অক্টোবর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার বাদী হয়ে লালমনিরহাট থানায় তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করেন। এছাড়াও সুমনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, লালবাগ থানায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টাসহ আরো ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি এজাহার ভুক্ত আসামি।
মামলার এজাহার ও সিআইডি সূত্র জানায়, সুমন খানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ, চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ ও টাকা পাচারের বিষয়ে দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে লালমনিরহাট সিআইডি। অনুসন্ধানে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৩৭ কোটি ৪৯ লাখ ৪৮ হাজার ৭৬০ টাকা, তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার রুমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চার কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩১০ টাকার সন্ধান পায় সিআইডি। এছাড়া সুমন খানের কর্মচারী লালমনিরহাট পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা তৌকির আহমেদ মাসুমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮৬ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ১২৭ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা, স্থানান্তর ও পাচার করা হয়। এসব অপরাধে মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারায় তাদের তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি।
আপনার মতামত লিখুন :