ঢাকা শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
রবীন্দ্রনাথের কাচারি বাড়ি

সংস্কার হলেও অরক্ষিত থাকায় দর্শনার্থীদের হয়নি উন্মুক্ত

সুজন কুমার, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম

সংস্কার হলেও অরক্ষিত থাকায় দর্শনার্থীদের হয়নি উন্মুক্ত

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

কুষ্টিয়া কুঠিবাড়ির পাশাপাশি রবীন্দ্র স্মৃতিধন্য আরেকটি মর্যাদাপূর্ণ স্থাপনা শিলাইদহ কাচারি বাড়ি। ঐতিহ্যগতভাবে এই কাচারি বাড়িটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করলেও যুগের পর যুগ অযত্ন-অবহেলায় তা ছিল অবহেলিত ও ভগ্নদশায়। সম্প্রতি সরকারি অর্থায়নে জরাজীর্ণ কাচারি বাড়িটি সংস্কারের পর জৌলুস ফিরেছে। তবে তা এখনও অরক্ষিত।

জানা গেছে, জমিদারী পরিচালনায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৯ সালে এসেছিলেন পদ্মা-গড়াই এর নিভৃত পল্লী শিলাইদহে। এখনে আসার পর প্রজাদের কাছ থকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে তৎকালে পদ্মা নদীর অদূরে তিনি স্থাপন করেছিলেন কাচারি বাড়ি। ১৯০১ সাল পর্যন্ত তিনি শিলাইদহে বসে জমিদারী পরিচালনা করেন। ছয় কক্ষবিশিষ্ট দ্বিতল ভবনের এই কাচারি বাড়ির নির্মাণ শৈলী মনোমুগ্ধকর ও দৃষ্টিনন্দন।

তবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারী এস্টেট পরিচালনার দায়িত্ব ছেড়ে শিলাইদহ ত্যাগের পর থেকে কাচারি বাড়িটি অযত্ন-অবহেলার শিকার হয়। কালক্রমে বাড়িটি পরিণত হয় ভগ্নদশায়। সম্প্রতি প্রায় কোটি টাকা সরকারি অর্থায়নে কাচারি বাড়ির অবকাঠামোগত সংস্কার করা হয়েছে। এতে জৌলুস ফিরে পেলেও কাচারি বাড়িটি এখনো অরক্ষিত।

এছাড়া, সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ ও জনবল পদায়ন না হওয়ায় কাচারি বাড়িটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে না। পুরো কার্যক্রম বাস্তবায়ন না হওয়ায় কাচারি বাড়িতে এখন বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা ও ভুতুড়ে এক পরিবেশ।

রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির প্রায় কোয়াটার কিলোমিটার দূরত্বে কাচারিবাড়ি। দক্ষিণমুখী দ্বিতল এই ভবনটির পূর্ব-পশ্চিমে দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট ও প্রস্থ ২৯ ফুট। এছাড়া নীচতলা ও দোতলার সমানে ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি চওড়া দুটি বারান্দা রয়েছে। শাল কাঠের চওড়া বর্গার উপর চুন-সুড়কির সমন্বয়ে নির্মিত ভবনের ছাদ। দোতলায় উঠা-নামাতে ভবনের শেষ প্রান্তের পশ্চিমকোণে রয়েছে ঘোরানো-প্যাঁচানো লোহার সিঁড়ি। ভবনের সামনে রয়েছে ১১ জোড়া পিলার। পুরো ভবনের ছাদ নতুনভাবে নির্মাণ ও সংস্কারসহ লালচে রংয়ের আঁচড়ে দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কাচারি বাড়ি। সংস্কারে ২২-২৩ অর্থ বছরে ৩২ লাখ ও ২৩-২৪ অর্থ বছরে ৬১ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রাচীর নির্মাণের অভাবে কাচারি বাড়ির আঙ্গিনা এখন উন্মুক্ত। ফলে প্রতিদিন এখানে বসে মাদকাসক্ত ও বখাটেদের আড্ডা। অতিসত্বর প্রাচীর নির্মাণ ও জনবল পদায়নসহ কাচারি বাড়িটি রবীন্দ্র ভক্ত ও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য উন্মুক্তকরণ দাবী করেন তিনি।

কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মো. আল আমিন জানান, প্রথম ধাপের বরাদ্দ অর্থে শুধুমাত্র কাচারি বাড়িটি পুরোপুরি সংস্কার সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাচীর নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ এখনো পাওয়া যায়নি। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে প্রাচীর নির্মাণসহ কাচারি বাড়িটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

 

আরবি/ এইচএম

Link copied!