শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম

কোয়েল পাখি পালনে হাসানের মাসে আয় লক্ষাধিক টাকা

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম

কোয়েল পাখি পালনে হাসানের মাসে আয় লক্ষাধিক টাকা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ইচ্ছা শক্তি আর শ্রম মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে পারে, এই  আদর্শে  উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের ভাগ্য বদলে ফেলেছেন উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের মালিদহ গ্রামের আবুল বাশারের পুত্র এসএসসি পরীক্ষার্থী আবু হাসান। এ কাজে সহযোগিতা করেছে সৌদি প্রবাসী বড় ভাই সাইফুল ইসলাম ও বৃদ্ধ বাবা আবুল বাশার।

নিজের জায়গা জমি বলতে আবুল বাশারে আছে মাত্র ১৭ শতকের বসত ভিটা। আবাদি জমি বলতে কিছুই নেই। পৈত্রিক সুত্রে তেমন কোন সম্পতি না পেলেও বাড়ীতে গরু ছাগল পালন, এনজিওর লোন আর জমি বর্গা নিয়ে তিন সন্তানের পড়া লেখার পাশাপাশি অতি কষ্টেই চলতো আবুল বাশারের সংসার। একটা সময় বড় ছেলে সাইফুলের বিদেশে চাকুরীর সুযোগ আসে। সেই সুযোগ হাতছাড়া করেননি আবুল বাশার এনজি‍‍`র ঋণ, আত্মীয় স্বজনের নিকট থেকে ধার দেনা আর বাড়ীর গরু ছাগল বিক্রি করে ছেলেকে পাঠান সৌদি আরবে। ছেলে সাইফুল সৌদি আরবে একটি রেস্টুরেন্টে চাকুরীর সুবাদে সেখানে কোয়েল পাখির রোস্টের চাহিদা দেখে বাড়ীতে কোয়েল পাখির পালনের পরামর্শ দেন বাবাকে।

ছেলের পরামর্শে আবুল বাশার প্রথমে ৫ হাজার কোয়েল পাখির বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন খামার। সৌদি থেকে সাইফুলের দিক নির্দেশনা আর আবুল বাশারের ছোট ছেলে স্কুল পড়ুয়া আবু হাসানের কঠোর পরিশ্রমে লালন পালন করতে থাকেন কোয়েল পাখি। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি আবুল বাশারকে। তাদের কোয়েল পাখির খামার থেকে এখন প্রতি মাসে আয় লক্ষাধিক টাকা।

আবুল বাশারের ছোট ছেলে আবু হাসান জানায়, সৌদি আরব থেকে বড় ভাই সাইফুলের দিক নির্দশনায় পড়াশুনার পাশাপাশি কোয়েল পাখির খামার দেখাশুনা করি। ৫ হাজার কোয়েল পাখির পিছনে প্রতিদিন তিন হাজার টাকা করে খরচ হয়।  খামারে নেয়া   বাচ্চা পাখির বয়স  ৪৫ দিন পর থেকে প্রতিটি স্ত্রী পাখি প্রতিদিন ডিম দিতে শুরু করে। কোন কোন পাখি দিনে দুটি করেও ডিম দেয়। প্রতিদিন খামার থেকে গড়ে ১৫ শ থেকে দুই হাজার ডিম সংগ্রহ করা  হয়। প্রতি পিচ ডিম আড়াই টাকা থেকে তিন টাকা পিচ হিসাবে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পাইকারী বিক্রয় করি।

তিনি আরো বলেন, প্রথম ৪৫ দিন পর্যন্ত তাদের  পালনের জন্য ক্যাশ থেকে খরচ করা হলেও পরবর্তীতে ডিম বিক্রির টাকা দিয়েই খাবার সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি স্ত্রী পাখি ১৪ মাস বয়স পর্যন্ত ডিম দেয়। ১৪ মাস পর ৫৫/৬০ টাকা দরে প্রতিটি কোয়েল পাখি পাইকারী বিক্রি করা হয়। ডিম ও কোয়েল পাখি বিক্রয় করে খরচ বাদে মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় হয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আরও বেশি উদ্যোক্তা তৈরীর  জন্য  নিজস্ব হ্যাচারী থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে খামারীদের বাচ্চা সরবরাহের লক্ষ্যে মেশিন ক্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এতে তার  আয়  আরো বাড়বে। আগামী ২৫ সাল থেকে এর কার্যক্রম শুরু করবেন  আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাদের এই খামার দেখতে আসেন অনেকেই। অপরদিকে সাইফুলের পিতা আবুল বাশার গড়ে তুলেছেন ছোট্ট গরুর ও ছাগলের খামার। খামারটিতে বর্তমানে বিভিন্ন জাতের ৮ টি গরু ও ১২ টি ছাগল রয়েছে। কোয়েল পাখির খামার  দেখা শুনার  পাশাপাশি গরু ছাগল গুলো দেখাশুনা করেন  হাসান। এখান  থেকেও ভাল আয় হয় বলে আবুল বাশার জানান।

তিনি জানান, আমার তেমন সম্পদ নেই। বাড়ীতে বড় ছেলের পরামর্শে কোয়েল পাখির খামার আর গরু ছাগল লালন পালন করে আল্লাহর রহমতে ভালই চলছি। কোয়েল পাখির প্রথম চালানের লাভ্যাংশের ৫ লক্ষ টাকায় ৫ শতক মাটি ক্রয় করেছি। সহযোগিতা পেলে বড় কিছু করার স্বপ্ন আছে। তখন কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, কোয়েল পাখি  গুলি  ছোট হওয়ার কারণে কম জায়গায় অনেক পাখি পালন করা যায়। আবার খাবার ও ঔষধ খরচও কম। সে কারণে কোয়েল পাখির খামার একটি লাভজনক ব্যবসা। অন্যান্য পশু পালনে রোগ বালাইয়ের ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি থাকলেও কোয়েলের ক্ষেত্রে তা একে বারে কম। শুধু  মাত্র রাণীক্ষেত ভ্যাকসিন সময়মত দিতে পারলে ওই পাখির আর কোন সমস্যা দেখা দেয় না। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে উদ্যোক্তা তৈরিতে খামারীদের সব ধরনের সযোগিতা করা হয় বলে তিনি জানান ।

আরবি/জেডআর

Link copied!