ঢাকা শুক্রবার, ০৭ মার্চ, ২০২৫

ধামইরহাটে ৪০ পিরের মাজার

মো. মুমিনুল ইসলাম, ধামইরহাট
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ০১:৪১ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

৪০ পিরের মাজার রয়েছে নওগাঁর ধামইরহাটে। হজরত আলী শাহ (রহ.) ১৮০০ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সুদূর ইরানের ইস্পাহান থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ধামইরহাটের চকউমর গ্রামে ৪০ জন বুজুর্গ সঙ্গীসহ খানকা স্থাপন করেন। পরে পাশের যোথশ্রীরাম মৌজার বর্তমান ফার্সিপাড়ায় মক্তব স্থাপন করে এলাকায় ইসলাম প্রচারসহ জনগণকে উর্দু, আরবি, ফার্সি শিক্ষাদান শুরু করেন। এলাকায় ফার্সি শিক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় এখানকার জনগণ ফার্সি শিক্ষার পাড়া বা ফার্সিপাড়া হিসেবে সম্বোধন করতে শুরু করে। পির সাহেব কেবলার ৪০ জন সঙ্গী এই অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে পড়েন এবং তারা ওই গ্রামগুলোতে খানকা স্থাপন করেন। 


ধামইরহাট অঞ্চলের বহু গ্রামে মাজারগুলো পিরদের স্মৃতি বহন করে চলেছে। এই অঞ্চলে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে ওই আউলিয়াগণের ভূমিকা অনস্বীকার্য। হজরত আলী শাহ (রহ.)-এর বৃদ্ধকালে তার সুযোগ্য ছেলে পিরজাদা মাহমুদ শাহ (রহ.) পিতার খেলাফত গ্রহণ করে এলাকায় ইসলাম প্রচারে নিজেকে উৎসর্গ করেন। পিতার মক্তবে বসে দূর-দূরান্ত থেকে আসা অতিথিদের কাছে ইসলামের অমিয় বাণী প্রচার করেন। 

হজরত মাহমুদ শাহ (রহ.) একেবারে বৃদ্ধকালে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট কর্তৃক দিনাজপুর জেলার পরগণে সন্তোষ ও পরগণে গিলাহবাড়ির কলেক্টরি উত্তলনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। কিন্তু জমিদারি সনদ পেতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। বনেজ মোহাম্মদ শাহর আমলে ১৮৬৯ সালে ওই জমিদারি সনদপ্রাপ্ত হন। 

বনেজ মোহাম্মদ শাহ ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি বৈষয়িক উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করেন। তার তিন ছেলে রহমান চৌধুরী, সিরাজ চৌধুরী ও ছলিম মোহাম্মদ চৌধুরী মোল্লাগিরি ছেড়ে ভূসম্পত্তি বাড়াতে থাকেন। ছলিম মোহাম্মদ চৌধুরী জয়পুরহাটের লকমার জমিদারকন্যাকে বিয়ে করেন। ছলিম মোহাম্মদ চৌধুরীর ছেলে শফিউদ্দীন চৌধুরী এলাকার জনদরদি ও প্রজাহিতৈষী জমিদার ছিলেন। পির সাহেব কেবলা হজরত আলী শাহ (রহ.)-এর ৪০ পিরের মাজারটিতে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উদ্যোগে এখনো বাৎসরিক ইছালে ছাওয়াব অনুষ্ঠিত হয়।