ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম

সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া কর্মরত বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের (রিপ্রেজেন্টেটিভ) দখলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল। বিপাকে পড়ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা।

ভুক্তভোগীরা জানায়, চিকিৎসকের রুম থেকে বের হতে না হতেই রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি আর ছবি তোলা শুরু করেন তারা। কোনরকম অনুমতি না নিয়েই হাত থেকে কেড়ে নেন রোগীর ব্যবস্থাপত্র। দীর্ঘদিন যাবৎ এমন চিত্র সাধারণ মানুষের চোখে পড়লে ও চোখে পড়ে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের অভ্যন্তরে প্রবেশ, রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তুলা বিষয়ে নিয়ম নীতি  থাকলে ও এ বিষয়টিকে কোনভাবে কর্ণপাত করছেন না অনেকেই। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা একাধিক রোগীরা জানায়,  হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসলে ঔষধ কোম্পানির লোকজন এসে প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নেন। এতে আমরা বিব্রতবোধ করি।

সরকারি হাসপাতালে বর্হি-বিভাগে ডাক্তার দেখাতে প্রতিদিন ছুটে আসেন শত শত রোগী । কিন্তু রোগী দেখার সময় ওই ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ডাক্তারদের রুমে ঢুকে তাদের কোম্পানির ঔষধ সম্পর্কে লেকচার দিয়ে সময় নষ্ট করেন। আর এদিকে অসহায় রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন সিরিয়ালের জন্য। তারপর সিরিয়াল পেয়ে যখন রোগীরা ডাক্তার দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাইরে বের হন তখনই কোনরকম অনুমতি না নিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের হাত থেকে কেড়ে নেন ব্যবস্থাপত্র। তারপর একাধিক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা শুরু করেন পালাক্রমে ছবি তোলা। সাটুরিয়া সদর হাসপাতালে ঢুকলে মনে হয় চিকিৎসা নিতে রোগী এবং রোগীর স্বজনরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় হাসপাতালে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সকাল থেকে ভিড় করে প্রতিটি বিভাগের ডাক্তারদের রুমের সামনে আর হাসপাতালের গেটে। পদোন্নতি ও চাকুরি বাঁচানোর জন্য দিনের পর দিন তারা এহেন কর্মকান্ড করেই চলেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি জানায়, ‘পদোন্নতি ও ঔষধ কোম্পানির টার্গেট পূরণ করতেই রোগীর কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে নিশ্চিত হতে হয় ডাক্তার কোন কোম্পানির ঔষধ লিখেছে। নিজেদের পদোন্নতি ও চাকুরি টিকিয়ে রাখতে আমরা ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করি’। তারা আরও বলেন, ‘তাদের কোম্পানির ঔষধ লেখার কারণে ডাক্তারদের প্রতিমাসে কোম্পানি থেকে উপঢৌকন দেওয়া হয়। যে ডাক্তার যত বেশি ঔষধ লেখেন, তাদেরকে তত বেশি উপঢৌকন দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে দায়িত্বরত সাটুরিয়া উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, কোন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ছবি তোলার সুযোগ নেই। তাছাড়া তারা সপ্তাহে রবিবার ও নির্ধারিত সময় ব্যতীত ডাক্তার ভিজিট করতে পারবেন না। আমরা বারবার এ ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করেছি। এরপরও যদি তারা না শোনে তবে অবশ্যই তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!