নাটোরে স্কুল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে (১০) ধর্ষণের দায়ে মো. হযরত আলী (৪৮) নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ দণ্ডাদেশ দেন। এসময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার সময় আসামির বয়স ছিল ৪২ বছর। দণ্ডপ্রাপ্ত হযরত আলী সদর উপজেলার বাগরুম গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ব্র্যাক পরিচালিত বাগরুম শিশু নিকেতনের এক শিক্ষিকার স্বামী।
নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নির্যাতিত ওই শিশু ব্র্যাক পরিচালিত সদর উপজেলার বাগরুম শিশু নিকেতনে ৫ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করত। স্ত্রী শিক্ষিকা হওয়ার সুযোগে হযরত আলী ওই শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতেন। ২০১৮ সালের ৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে ওই শিশু শিক্ষার্থী ব্র্যাক পরিচালিত বাগরুম শিশু নিকেতনে হযরত আলীর কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়া শেষে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিলেও ওই শিক্ষার্থীকে স্কুলের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়।
পরে সেখানে তার কক্ষে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। একই সঙ্গে বলে ঘটনা কাউকে বললে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেবে, এমনকি প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও ভয়ভীতি দেখায়। এ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থী ঘটনাটি কাউকে না বললেও ঘটনার চার দিনের মাথায় ১২ জুলাই দুপুরের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় তার বাবা-মা জিজ্ঞাসা করলে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে এ ঘটনায় বাবা আব্দুল আওয়াল বাদি হয়ে হযরত আলীকে অভিযুক্ত করে ১৩ জুলাই নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে হযরত আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।
মামলাটি সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন তদন্ত শেষে একই বছরের ১৯ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দেন। ওই মামলার দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামির উপস্থিতিতে আজ দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
আপনার মতামত লিখুন :