ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

৩৯ বছরে ৪৫ লাখ বাংলাদেশির চোখে আলো ছড়ালো অরবিস

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম

৩৯ বছরে ৪৫ লাখ বাংলাদেশির চোখে আলো ছড়ালো অরবিস

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গত ৩৯ বছরে প্রায় ৪৫ বাংলাদেশি রোগীর চোখের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল। দুস্থদের চোখে ফিরিয়ে দিয়েছে আলো। দীর্ঘ এ যাত্রায় পরীক্ষা করা হয় ৭৮ লাখ মানুষের চোখ।

২১ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার  চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাই আই হসপিটালের বিভিন্ন কার্যক্রম সরজমিনে দেখতে গেলে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের এমন তথ্য দেন অরবিস ইন্টারন্যাশনালের ভাইস প্রেসিডেন্ট (গ্লোবাল কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মার্কেটিং) ক্রিস্টিন টেইলর।

তিনি ‍বলেন, বাংলাদেশে অরবিস সম্পর্কে অরবিস গত ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে। ৩৯ বছরে অরবিস শিশুদের চক্ষু চিকিৎসা, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনা সার্জারি, কর্নিয়াল রোগ এবং আই ব্যাংকিং, প্রিম্যাচিউর শিশুদের রেটিনোপ্যাথি (আরওপি) এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর স্থানীয় চিকিৎসকদের দক্ষতা ও জ্ঞান উন্নত করতে সহায়তা করেছে।

তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে অরবিস ৭৮ লাখেরও বেশি চক্ষু পরীক্ষা পরিচালনা করেছে, ৪৫ লাখেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের জন্য চিকিৎসা ও অপটিক্যাল সেবা প্রদান করেছে, ২ লক্ষ ৫৮ হাজারটিরও বেশি চক্ষু সার্জারিতে সহায়তা করেছে, এবং ৪০ হাজার এর বেশি মানুষকে চক্ষু চিকিৎসার ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বাংলাদেশে ১১তম বার ও চট্টগ্রামে ৫ম বারের মতো অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ক্রিস্টিন টেইল আরও বলেন,  অরবিস ৪২টি ভিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে চক্ষু সেবা ছড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারী-নেতৃত্বাধীন গ্রিন ভিশন সেন্টার যা নারীদের জন্য প্রচলিত বাধাগুলো দূর করে সেবার সুযোগ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও, অরবিস ১৭টি মাধ্যমিক (সেকেন্ডারি) হাসপাতাল, ৪টি তৃতীয় পর্যায়ের (টার্শিয়ারি) হাসপাতাল, ৪ টি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার, এবং ২ টি ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা বা উন্নত করতে সহায়তা করেছে।  

অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগি পরিচালক (গ্লোবাল কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মার্কেটিং) জেনা মন্টগোমারি বলেন, অরবিস বাংলাদেশের ৪০০টি কমিউনিটি ক্লিনিককে দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষার সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রিম্যাচিউর শিশুদের রেটিনোপ্যাথি নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনার জাতীয় গাইডলাইন তৈরি করতে অংশীদার হয়েছে অরবিস। এই রোগটি শিশুদের অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। ২০০০ সালে, অরবিস বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী প্রোগ্রাম চালু করে এবং স্থানীয় চক্ষু হাসপাতাল ও এনজিওদের সাথে মিলে চক্ষু রোগ প্রতিরোধ ও দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করে, যা দূরবর্তী এলাকায় যেমন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায় এবং সিলেটের নারী চা শ্রমিকদের মধ্যেও পৌঁছে গেছে।

উল্লেখ্য, ফেডেক্স অরবিসের মিশনে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থ, বিমান ও লজিস্টিক সহায়তা দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে এবং অ্যালকন কেয়ারস, অ্যালকন ফাউন্ডেশন ও ফেডেক্স-এর সহায়তায়, অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল চট্টগ্রামে দুই সপ্তাহব্যাপী চক্ষু প্রশিক্ষণ প্রকল্প শুরু করেছে।বাংলাদেশে চক্ষু সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য এটি অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটালের একাদশ অবতরণ। প্রথমবার ১৯৮৫ সালে এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালে এই প্রশিক্ষণ প্রকল্প অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার  চট্টগ্রাম আই ইনফার্মারি এবং ট্রেনিং কমপ্লেক্স (সিইআইটিসি)সহ ৭ প্রতিষ্ঠানের ১৭০ জন চিকিৎসক উন্নত প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!