ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

কোয়েল পাখি পালনে স্বাবলম্বী মেহেরপুরের নাসির

রাব্বি আহমেদ, মেহেরপুর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৪, ০৭:৩৬ পিএম

কোয়েল পাখি পালনে স্বাবলম্বী মেহেরপুরের নাসির

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কোয়েল পাখির খামার করে স্বাবলম্বী আনসার ভিডিপির কমান্ডার নাসির উদ্দিন নিজ বাড়িতেই কোয়েল পাখির খামারটি তৈরি করেছেন তিনি। তার এ সাফল্য এলাকায় কোয়েল পালনে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। অনেক তার এই খামার থেকে কোয়েল পাখি সংগ্রহ করে ছোট আকারে শুরু করছে কোয়েল পাখি পালন। 

আজ থেকে প্রায় ১৮ বছর আগে নিজের ট্রাক্টর নিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন রাজশাহীতে। একটি কোয়েল পাখির খামার দেখে নিজের স্বপ্ন জাগান কোয়েল পাখির খামার তৈরির। খামারের মুখে কোয়েল পাখি পালন ও তার ডিম উৎপাদনের কথার গল্প শুনে প্রেমে পড়ে যান কোয়েল পাখির। তাদের দেওয়া পরামর্শ মোতাবেক ঘর ও কোয়েল পাখি কিনে শুরু করেন প্রাথমিকভাবে কোয়েল পালন। সে সময় কোয়েল পাখি ও ঘর তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা। বলছিলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আনসার ভিডিপির কমান্ডার নাসির উদ্দিনের কথা।

খামারি নাসির কমান্ডার দৈনিক রূপালি বাংলাদেশকে জানান, বর্তমানে তার খামারে ১ হাজারের মত কোয়েল পাখি আছে। একদিন তার খামার থেকে ৭০০-৭৫০টি ডিম উৎপাদিত হয়ে থাকে। প্রতি মাসে সফল খরচ বাদ দিয়ে এই খামার থেকে তিনি ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় করেন। এই টাকা চার সদস্য পরিবারের সংসারে হাল ধরেছেন তিনি।

মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের স্কুল ছাত্র আব্দুল আলীম দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, কোয়েল পাখি সামান্য জায়গায় পালন করা সম্ভব। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট পরিসরে একটি খামারের উদ্দেশ্যেই পাখি সংগ্রহ করতে এসেছে। সবার মুখে শুনেছি কোয়েল পাখির ডিম ও মাংস অনেক সুস্বাদু। আর একটি কোয়েল পাখি বছরে ২৫০ থেকে ২৭০টি ডিম দিয়ে থাকে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার গৃহবধূ শাকিলা খাতুন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, কোয়েল পাখির ডিমে অনেক পুষ্টি রয়েছে। শীতকালে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্য অনেক উপকারী। আমার দুই বয়সী শিশুর জন্য নাসির কমান্ডার চাচার বাড়ি থেকে ডিম সংগ্রহ করতে এসেছি।

গাংনী উপজেলার থানাপাড়ার আমেনা খাতুন দৈনিক রূপালি বাংলাদেশকে জানান, স্বামী মারা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। পরিবারের সংসারে হাল ধরার মতো তেমন কোনো পুরুষ নেই। নাসির কমান্ডারে কাছ থেকে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করে ছোট একটি খামার তৈরি করেছি। সেই খামারে ডিম ও কোয়েল পাখি বিক্রি করে কোন রকমে সংসার চলে। আজ আবার কিছু কোয়েল পাখি বাচ্চা কেনার জন্য তার কাছে এসেছি। তার খামারে উৎপাদিত কোয়েল পাখি অনেক উন্নতমানের রোগ বালাই মুক্ত।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আরিফুল ইসলাম দৈনিক রুপালি বাংলাদেশকে জানান, কোয়েল পাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। একটি কোয়েল পাখি জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে ডিম দিতে শুরু করে। বছরে একটি কোয়েল পাখি প্রায় ২৫০ থেকে ২৮০ টি ডিম দিয়ে থাকে। প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে এই কোয়েল পাখির খামারিকে দেয়া হচ্ছে সার্বিক সহযোগিতা বলে জানান তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!