ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক বন্ধ, বিপাকে পর্যটকেরা

এম. মাহমুদুর রহমান আলতা, কমলগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম

কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক বন্ধ, বিপাকে পর্যটকেরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

টানা আন্দোলনের পর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর চা-বাগানের ভেতরে থাকা মাধবপুর লেক পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনরত চা-শ্রমিকেরা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চা-বাগান ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) শ্রমিকেরা বুধবার সকাল থেকে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজনকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। শ্রমিকদের যদি কোন সমাধান না হয় তাহলে লেক বন্ধ থাকবে বলে জানান চা শ্রমিকরা।

গত ২০ অক্টোবর থেকে বকেয়া মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন এনটিসির ফাঁড়ি বাগানসহ ১৬টি চা-বাগানের শ্রমিকেরা। আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, তাঁদের প্রাপ্য মজুরি না পেলে কাজে যোগ দেবেন না এবং এসব সরকারি বাগানগুলোতে কোন ধরনের পর্যটকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক নাইম হোসেন ও ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা হাসান আল মামুন বলেন, মাধবপুর লেকের কথা অনেক শুনেছি। আজ পরিবার নিয়ে ঘুরে দেখার জন্য এলাম। এখন দেখি, লেকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক অনুরোধ করেও ভেতরে যেতে পারলাম না। তাই মাধবপুর লেকের সামনে থেকে ঘুরে যাচ্ছি।

মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিক লক্ষ্মণ বলেন, আমাদের শ্রমিকেরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কারও ঘরেই খাবার নেই। আমরা আর কত দিন এভাবে চলব? আমাদের তো টাকা পয়সা জমা নেই। ঘরে ছেলেমেয়েরা না খেয়ে বসে থাকে। কী যে একটা কঠিন সময়ের ভেতরে যাচ্ছি বলা মুশকিল। এখানে লেকে পর্যটক ঢুকলে টিকিট কাটতে হয়। সেই টিকিটের টাকাও মালিক পক্ষ পান। তাঁরা এগুলো নিয়ে যান। আর আমরা না খেয়ে মরি। এ জন্য আজ থেকে আমরা সব বন্ধ করে দিয়েছি। সকাল থেকে অনেকেই এসেছেন। আমরা কাউকেই ঢুকতে দেইনি।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউড়ি বলেন, শ্রমিকেরা তিন মাস ধরে মজুরি পাচ্ছেন না। খেয়ে না–খেয়ে জীবনযাপন করছেন। বুধবার সকাল থেকে মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিকেরা পর্যটকদের লেকে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা শ্রমিকেরা যেহেতু কর্মবিরতিতে আছি, লেকের সিকিউরিটি (নিরাপত্তা) কে দেবে? এর চেয়ে বন্ধ থাকা ভালো। তা ছাড়া লেকের টিকিটের টাকাও মালিক পক্ষ নিয়ে যাচ্ছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন বলেন, শুনেছি, মাধবপুর লেক পর্যটকদের জন্য শ্রমিকেরা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।

আরবি/জেডআর

Link copied!