ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের বিখ্যাত কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম

সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের বিখ্যাত কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বিখ্যাত বগুড়ার সারিয়াকান্দি চরাঞ্চলের মরিচ দেশে আজো সুনাম রয়েছে। যা বগুড়ার ঝাল নামে পরিচিত। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও উপজেলার যমুনা নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চলে কৃষকরা কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু করেছেন । চরাঞ্চল জুড়ে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড মরিচের চাষ হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক। এদিকে নতুন মরিচ বাজারজাত হওয়ায় কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। এ বছর মৌসুমে অতি বৃষ্টিপাতের কারণে আগামভাবে রোপণকৃত মরিচে রোগবালাই এবং মরিচ গাছ পচন রোগও বেশি হয়েছে। এতে বার বার নতুন মরিচের চারা খোসা দিতে হয়েছে। তবে সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে আসায় প্রচুর পরিমাণে মরিচ ধরেছে এবং পরিপক্ক হয়েছে। তাই চরাঞ্চলে কৃষকেরা এখন মরিচ উত্তোলন এবং বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কাঁচা মরিচ উত্তোলনে পুরুষের পাশাপাশি উপজেলার অনেক নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকদের জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত দিন মুজুরি পাচ্ছেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাটির চরের দুলাল মিয়া জানান, প্রতি বছরের মত এ বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করেছেন। এ বছর চারা লাগানোর পর পরই অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পচারি রোগের আক্রমণ হয়। এ কারণে শুরুর দিকে মরিচ গাছের অবস্থা ভালো না থাকলেও পরবর্তীতে পরিচর্যার কারণে এবং ভালো আবহাওয়ার জন্য মরিচ গাছে অনেক মরিচ ধরেছে। এ পর্যন্ত তিনি ৩ বার করে মরিচ উত্তোলন করেছেন। প্রত্যেকবার বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৮ মণ করে মরিচ পেয়েছেন। বাজারে প্রতিমণ মরিচ ২৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। 

সারিয়াকান্দির পাইকারি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বিভিন্ন আড়তগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা মরিচ আমদানি হতে শুরু করেছে। উপজেলার যমুনাতীর ঘেষে ৪ থেকে ৫ টি কাঁচামালের আড়ত গড়ে উঠেছে। প্রতিটি আড়ত এ প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ মণ পর্যন্ত মরিচের আমদানি হচ্ছে। প্রতিমণ মরিচ সাদা ২১০০ থেকে ২২০০ টাকা এবং কালো ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলায় ৩ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপন্ন হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ৪ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন শুকনা মরিচ। এ বছর উপজেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩২০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু মরিচ বপন বা রোপণকালীন সময়ে বৈরী আবহাওয়ায় জন্য ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, শুরুর দিকে বৈরী আবহাওয়ার জন্য মরিচগাছের সমস্যা দেখা দিলেও আমাদের পরামর্শে এবং পরবর্তীতে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এখন বিভিন্ন এলাকায় মরিচের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কৃষকেরা কাঁচা মরিচ বাজারে বিক্রি করছেন এবং ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এতে বাজারে মরিচের সংকট দূর হয়েছে এবং আগের তুলনায় এখন মরিচের দাম তুলনামূলক কমেছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!