নওগাঁয় চলাচলের রাস্তা রোধ করে বাঁশের বেড়া দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নওগাঁ সদরের বোয়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলা ও ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদরের বোয়ালিয়া দক্ষিনপাড়া গ্রামে প্রভাবশালী মজিবর রহমান নামে একব্যক্তি দীর্ঘদিন থেকে গ্রামের লোকজনের সাথে জায়গা জমি নিয়ে নানা ভাবে বিবাদে জড়িয়ে আসছেন। তিনি গত ১৭ নভেম্বর সকালে বাঁশঝাড় কেটে কয়েকটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা প্রতিরোধ করে বাঁশের বেড়া দিচ্ছিলেন। এমতাবস্তায় আশেপাশের লোকজন তাকে চলাচলের রাস্তা থেকে সরিয়ে বেড়া দেয়ার অনুরোধ করলে বাকবিতান্ডা লাগে একপর্যায়ে সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ ঘটনায় মজিবর ও তার লোকজন লাঠিসোটা, লোহার রড-ধারালো হাসুয়া ইত্যাদি দেশিও অস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আসলাম হোসেনের উপর হামলা করে এসময় তার মা ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে ধারালো কোপ দা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে তার হাত কেটে যায়। এসময় আসলামের স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাতাড়ি মারধর করে। এ ঘটনায় গ্রামের আরও বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে মজিবর বাহিনী।
আহতরা হলেন, বোয়ালিয়া দক্ষিনপাড়া গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে আসলাম হোসেন (৩৬) আজাদ হোসেনের স্ত্রী আছমা বেগম (৫৭) এবং আসলাম হোসেনের স্ত্রী ববিতা খাতুন (৩২)। আহত আসলাম হোসেন ও তার মা আছমা বেগম বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ঘটনার দিন ইসলাম হোসেন গত ১৭ তারিখ নওগাঁ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সে অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত করে ২১ তারিখ বৃহস্পতিবার মামলা রেকর্ড করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলায় মজিবর রহমানকে প্রধান আসামী করে ৫জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন আহত আসলামের ভাই ইসলাম হোসেন। সে রাতেই মামলার ১নং আসামী মজিবর রহমানকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরন করে পুলিশ।
বোয়ালিয়া গ্রামের সৌরভ হোসেন নামে এক বাসিন্দা বলেন, মজিবর প্রায় প্রায় গায়ে পড়ে সবার সাথে গন্ডোগলে জড়ায়। আমরা প্রতিবাদ করলে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে আমাদের ভয়ভিতি ও মারপিট করে। ঘটনার দিন চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি লাগে এসময় মজিবরের ভাড়াটে লোকজন আমার চাচাতো ভাই, ভাবি ও চাচিকে পিটিয়ে আহত করে তারা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী একই গ্রামের বিলকিস ও মামুদা বেগম নামে দুই নারী বলেন, আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়ার রাস্তার মাঝখানে সে বাশেঁর বেড়া দিয়ে ঘিরে দিচ্ছিল। এসময় আমরা অনেকে অনুরোধ করি রাস্তা থেকে সরিয়ে বেড়া দিতে কিন্তু তিনি কর্নপাত করেন না। এসময় আসলাম হোসেন তার দেয়াল ছেড়ে বেড়া দেওয়ার কথা বললে মজিবরের ছেলে সম্রাট ও সামছুদ্দিন লোহার খুনতি, হাতুড়ি দিয়ে তাকে মার শুরু করে। তখন তার মা, বউ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কোপ দা ও হাসুয়া দিয়ে আঘাত করে মজিবর ও তার ছেলেরা। আমারা এগিয়ে গেলে আমাদেরও আঘাত করে তারা।
মামলার বাদী ইসলাম হোসেন বলেন, আমদের গ্রামের পুরুষ মানুষ প্রায় সবাই বিদেশ থাকে এ সুযোগে মজিবর গ্রামের মা বোনদের অকারনেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার জায়গা জমির উপরদিয়ে কেউ হাঁটাচলা করলে তাকে মারধোর করে, রাস্তা ঘিরে দেয়। ঘটনার দিন আমাদের বাড়ির ওয়াল ঘেষে বেড়া দিচ্ছিল আমার ভাই বিদেশ থেকে আসছে সে গিয়ে পৌরসভার নিময় মাফিক বেড়া দেয়ার কথা বলে। এতেই মজিবর ও তার ছেলেরা আমার ভাইয়ের উপর চড়াও হয় এবং হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। আমার মা, ভাবি আগাই আসলে তাদেরও আঘাত করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারসহ যে রাস্তা দিয়ে শতাধিক লোকজন চলাচল করে সে রাস্তার বেড়া তুলে দিয়ে আমাদের স্বাভাবিক চলাচলের নিশ্চয়তা চাই।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বোয়ালিয়ার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় প্রধান আসামী মজিবর রহমানকে আটক করা হয়েছে। এবং বাকি আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :