ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেলে নষ্ট মেশিন ক্রয়

সুদেব অধিকারী, সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেলে নষ্ট মেশিন ক্রয়

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য ক্রয় করা হয়েছিলো কোটি টাকা মূল্যের লিথোট্রিপসি মেশিন। যার মাধ্যমে কোনো ধরনের কাটা ছেড়া ছাড়াই কিডনি থেকে পাথর অপসারণ করা যাবে। এতে উপকৃত হবে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দরিদ্র রোগীরা। কিন্তু খাতা কলমে ঠিক থাকলেও ক্রয় করার পর থেকেই বিকল হয়ে পড়ে আছে অত্যাধুনিক এই লিথোট্রিপসি মেশিনটি। এতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে সেবা না পেয়ে বেসরকারি হাসপাতালে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে রোগীদের। ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র রোগীরা। এঘটনায় এর আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে কোটি টাকায় মেশিনটি সরবরাহ  করেন নারায়ণগঞ্জের সোনাকান্দা বন্দরের নৌবাহিনীর ডক ইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। কিন্ত কেনার পর থেকে লিথোট্রিপসি মেশিনটি এই হাসপাতালে রোগীদের জন্য একদিনও ব্যবহার হয়নি। প্রকৌশলীরা এই মেশিনটি প্রথম দিনে স্থাপন করার সময় মেশিনগুলো নষ্ট দেখতে পান। ছিল না মেশিনের গায়ে কোন কোম্পানীর নাম বা উৎপাদিত দেশের নাম। মেশিনটি এখনো অযত্ন অবহেলায় স্টোর রুমে পড়ে আছে।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার থেকে আসা কৃষক আব্দুল মোমিন জানান, আমার কিডনিতে পাথর হয়েছিলো শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেলে মেশিন দিয়ে অপারেশন হয় শুনে ভর্তি হই। পরে জানতে পারি মেশিন অনেকদিন হলো নষ্ট। তাই পেট কেটেই অপারেশন করতে হয়। মেশিনটি ভালো থাকলে আমাদের এতো কষ্ট হতো না।

কিডনির পাথর নিয়ে ভর্তি হওয়া আরেক রোগী জানান, ডাক্তার পরিক্ষা করে বলল পাথর হয়েছে অপারেশন করতে হবে। পেট কেটেই অপারেশন করতে হবে। মেশিন নাকি নষ্ট। এই অপারেশন বাইরের হাসপাতালে করতে অনেক টাকা লাগবে। আমরা গরিব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাবো। তাই বাধ্য হয়ে পেট কেটেই অপারেশন করতে হবে। মেশিনটি চালু হলে গরিব মানুষ উপকার পাবে। 

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মাসুদ রানা বাদল বলেন, কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য অত্যাধুনিক লিথোট্রিপসি মেশিন থাকলে রোগীদের কাটা ছেঁড়া ছাড়াই অপারেশন করা সম্ভব হবে। কিন্তু কেনার পর থেকেই সেই মেশিন নষ্ট। মেশিনটি চালু থাকলে দরিদ্র রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে দ্বিগুন টাকা গুনতে হতো না।

এ বিষয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য ব্যবহৃত লিথোট্রিপসি মেশিনটি ক্রয় করার পর থেকেই নষ্ট। আর এই মেশিন চালুর উদ্দ্যেগ আমরা কিভাবে নেব। ক্রয় করার পর থেকেই মেশিন নষ্ট। মেশিনটি ইন্সটলই হয় না। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরও এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় নি।

আরবি/জেডআর

Link copied!