ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

কুড়িগ্রামে কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে খেটে-খাওয়া মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৭:৫৪ পিএম

কুড়িগ্রামে কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে খেটে-খাওয়া মানুষ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে শীত জেঁকে বসেছে। তাপমাত্রা কমতে থাকায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। ফলে রাত গড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ঠান্ডার মাত্রা।  ভোররাত থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে গ্রামীণ জনপদসহ দিনের আলো। বেলা ৯টা পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা। ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ১৮-১৫ ডিগ্রির মধ্যেই উঠানামা করছে। যা আগামী সপ্তাহ জুড়েও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ডিসেম্বরে গিয়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। এসব তথ্য জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ।

এদিকে তীব্র শীত ও চারিদিকে ঘন কুয়াশা থাকায় বিপাকে পরছেন জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষজন। কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে চলতে দেখা গেছে ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ঘোড়ার গাড়িচালক, দিনমজুর সহ নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষজনকে। ঠান্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কর্মে ধীরগতি আসছে এসব শ্রেণী পেশার মানুষের। ঘন কুয়াশার কারনে বিলম্বিত হচ্ছে নৌ চলাচল।

কাজের সন্ধানে ভোরে ঘর থেকে বেরিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের দিনমজুর সোহরাব আলী (৬৮)। চুক্তিভিত্তিক কাজের জন্য ছুটছিলেন বিভিন্ন দিকে। এ সময় তার সাথে দেখা হয় ধরলা নদী রক্ষা বাঁধে।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‍‍`হামরা কাজ করি খাওয়া মানুষ! যে ঠান্ডা নামছে, এই ঠান্ডায় কাজ করি খাওয়া মুছিবত! সামনে যে ঠান্ডা আসতেছে, কী যে বিপদ হবে, আল্লাহ ছাড়া জানাইয়া নাই!

একই পরিস্থিতির শিকার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সর্দার পাড়া এলাকার নারী কৃষি শ্রমিক শ্রীমতি জয়ন্তী (৬৩)। একই দিন কাজের উদ্দেশ্যে তিনি যাচ্ছিলেন ভোগডাঙ্গার চর মাধবরাম এলাকায়। এ সময় তিনি বলেন, ‍‍`হামরা চরের অভাবী মানুষ। হামার এলাকাত ঠান্ডা বেশী। ঠান্ডা বেশী হইলেও উপায় নাই! কাজ না করলে খামো কী?‍‍`

শীত ও ঘন কুয়াশায় ধরলা নদীর অববাহিকায় নিজের জমিতে কাজ করতে এসেছেন ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক জাবেদ আলী (৭০)। কিন্তু অসুস্থ শরীর নিয়ে কনকনে ঠান্ডায় ক্ষেতে নামার মতো শীরিরিক অবস্থা তাঁর নেই। তার ব্যবহৃত পুরাতন কম্বলটি ছিড়ে গেছে জানিয়ে চললাম মৌসুমে তিনি একটি নতুন কম্বলের আকুতি জানান।

জাবেদ আলী বলেন, ‍‍`আমি বুড়া মানুষ। আমি কৃষি কাজ করি খাই। ঠান্ডার কারনে ঘর হতে বের হতে পারি না। আমাকে একটি কম্বল দিলে উপকার হতো!‍‍`

কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ১৮-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। যা আগামী সপ্তাহেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা জুড়ে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।‍‍` 

আরবি/জেডআর

Link copied!