মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নুরজাহান চা-বাগানের ইউপি সদস্য ছালেহ আহমদের বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে আলাল মিয়া (৪৫) নামে একজন ডাকাত নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ২ জন। রোববার ২৩ নভেম্বর ভোর রাতে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আলাল মিয়া সিলেট জেলার মোগলাবাজার থানার গোটাটিকর গ্রামের সোনাফর আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আরও ২ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা।
মাধবপুর ইউপি সদস্য ছালেহ আহমদ ও এলাকাবাসী জানান, রাত পৌনে ২টার দিকে ১০/১২ জনের একদল ডাকাত ইউপি সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে চা-বাগানের পাগলা ঘণ্টা বাজালে স্থানীয় চা শ্রমিকরা ডাকাতদের ঘেরাও করেন। এসময় ডাকাতরা স্থানীয় জনতার ওপর হামলা করতে এগিয়ে আসলে জনতা তাদের ধরে গণপিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই আলাল মিয়া নামের এক ডাকাত প্রাণ হারান ও বাকিরা পালিয়ে যান। রোববার ভোরে রক্তের ছাপ দেখে চা-বাগানের ভেতর থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত আবুল মিয়ার ছেলে আব্দুল মালেককে তীরবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসা বাকি ডাকাতরা মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলীর ভাতিজা সেজুল মিয়ার লংগুরপাড়স্থ গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালানোর সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চারজন ডাকাত পালিয়ে গেলেও সেজুল মিয়াকে আটক করা হয়। পরে রোববার সকাল ৯টায় কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি চা-বাগানের সেকশন থেকে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় শ্রীপুর গ্রামের শ্রাবণ মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরফে জসিমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয় চা শ্রমিকরা। অপর আহত কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৪১) ও শ্রাবন মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরফে জসিম (৩৮) মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে আলাল মিয়া নামে এক ডাকাত নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শামীম আকনজী জানান, আটক ডাকাতদের বিরুদ্ধে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন থানায় ডাকাতির মামলা রয়েছে। ঘটনায় আটক ৩ জন হলেন কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের লংগুরপার গ্রামের আরজদ আলীর ছেলে সেজুল মিয়া (৩৭), শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৪১) ও শ্রাবন মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরফে জসিম (৩৮)। আটককৃতদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :