উল্লাপাড়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অযত্ন অবহেলায় বিভিন্ন অবকাঠামো দীর্ঘদিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেলওয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য নির্মিত বাসগৃহগুলো এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় সেখানে এখন বসছে মাদকসেবীদের আড্ডা। চলছে অনৈতিক কর্মকান্ডও।
অভিযোগ আছে, ভাসমান পতিতাদের কর্মকান্ড এসব পরিত্যক্ত গৃহেই চলে। একই সঙ্গে চুরি হয়ে যাচ্ছে এসব অরক্ষিত ঘর বাড়ির জানালা, দরজাসহ অন্যান্য সামগ্রী। অবৈধভাবে রেলওয়ের জায়গা দখল করছে প্রভাবশালীরা। শুধু তাই নয় দখলকৃত জায়গাগুলোর পজেশিনও বিক্রির অভিযোগ রয়েছে দখলদারদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এসব অবকাঠামো স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও রেলকর্মীরা ব্যবহার করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে এসব আবাসনগুলো প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে
বাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোন কোন কোয়ার্টার ইতোমধ্যেই ভেঙ্গে পড়েছে। এইসব পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে বাসা বেঁধেছে মাদকসেবীরা। লোকচক্ষুর অন্তরালে এখানে চলে ভ্রাম্যমান
পতিতাদের অনৈতিক কর্মকান্ড। আর এতে রেলওয়ের সম্পদ যেমন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি স্থানীয় যুবসমাজও কুলষিত হচ্ছে।
রেলওয়ের পরিত্যক্ত এসব সম্পদ অরক্ষিত থাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা এর অবকাঠামো ও জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে নিচ্ছে। অবিলম্বে এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের আন্তরিক নজরদারী না নেওয়া হলে রেলওয়ে হারাবে বিপুল পরিমান অর্থের সম্পদ।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আব্দুল বাতেন এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন স্টেশনের পুরনো কোয়ার্টারগুলোর বেশিরভাগই এখন পরিত্যক্ত।
উল্লাপাড়ায় এসব অবকাঠামো নষ্ট হওয়ার বিষয়টি তারা বিভাগীয় প্রকৌশল দপ্তরে জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে বিভাগীয় প্রকৌশল দপ্তর এসব কিছুই দেখভাল করে থাকেন। উল্লাপাড়া রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগের ফিল্ড কানুনগো আবু বক্কার সিদ্দিক এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলের বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবহিত। তবে প্রভাবশালীরা জায়গা দখল করে আবার পজেশন বিক্রির বিষয়টি তিনি জানেন না। তিনি এই কর্মস্থলে নতুন এসেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী বিরমল মন্ডলের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, রেলের অনেক জায়গাতেই এরুপ পরিত্যক্ত সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ স্থানীয়রা প্রভাবশালীরা অবৈধ দখলেরও চেষ্টা করছে। তবে রেল বিভাগ থেকে এমন অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রায়শই আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। আসলে রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য সরকারি কোয়ার্টার ভোগ করলে মূল বেতনের শতকরা ৫০ ভাগ রেল কর্তৃপক্ষকে প্রদান করতে হয়। যেহেতু এসব কর্মচারীর বেতন কম, সেজন্য তারা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে রেলের বাসায় না থেকে আশেপাশে ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি ভাড়া নিয়ে চাকরি করেন। এসব কর্মচারীর বাড়ি ভাড়া কমানোর ব্যবস্থা করা গেলে রেলওয়ের নিজস্ব কোয়ার্টারে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা যেতে পারে। তবে তদন্ত করে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে রেল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :