ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
ঢেকে রাখা হয়েছে ভাস্কর্য

রাঙামাটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের নামে লুটপাট

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম

রাঙামাটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের নামে লুটপাট

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের নামে টাকা লোপাট। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ৩ মাস ১০ দিন পর শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে ।

অনেকে বলছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্মিত এই ভাস্কর্য নির্মাণে সাবেক মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিন‍‍`র হাত রয়েছে ও ঠিকাদারি কাজ করেছেন জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি শফিউল আজম। প্রায় ৪ কোটি টাকার ভাস্কর্যটি রাঙামাটিবাসীর কোন কাজেই লাগে না। শুধু শুধু টাকা গুলো জলে ফেলার হয়েছে। এই ভাস্কর্যের টাকা দিয়ে রাস্তা ঘাট স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দির ও কেয়া নির্মাণ করা যেত। অনেকে বলেছেন যারা এই ভাস্কর্য নির্মাণের সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা উচিৎ। 

এসব ভাস্কর্য নির্মাণ মানি পকেট মোটাতাজা করা ছাড়া আর কিছুই না।  আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ  ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে এধরনে প্রকল্প গ্রহন করে কোটি কোটি টাকা জলে ফেলেছে। বঙ্গবন্ধুর নামে প্রকল্প গ্রহন সহজ তাই লুটপাট করা ও সহজ।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে শহরের সেনা জোন ও উপজেলা পরিষদের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ভাস্কর্যটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৩ সালে তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে নির্মিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি প্লাস্টিকের আবরণে মোড়ানো হয়েছে। আর এই দৃশ্য দেখতে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসছেন মোড়ানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দেখতে।

এ বিষয়ে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এসব ভাস্কর্য ছিল পুঁজিবাদী চিন্তা-চেতনার প্রতীক। তাদের ভাষায়, ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী এসব প্রতীক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আদর্শের সঙ্গে যায় না। তাই এগুলো সরানো জরুরি।

উল্লেখ্য, এর আগে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পূর্বে দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল, ভাস্কর্য ও প্রতিকৃতি স্থাপন করে আওয়ামী লীগ সরকার। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে টানা ১৫ বছর ধরেই ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও প্রতিকৃতি তৈরির মহোৎসবে মেতে উঠেছিল দলটি। এই কর্মে উদ্যোগী ভূমিকা ছিল স্থানীয় প্রশাসনেরও।

অনেক সংস্থা নিজ উদ্যোগেও এগুলো তৈরি ও স্থাপন করে। তার ধারাবাহিকতায় তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ রাঙামাটিতে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য নির্মাণ করে। জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩০ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ও এর আশেপাশে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

৩১ ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ১২ ফুট প্রস্থের ভাস্কর্যটি নির্মাণে প্রথম ধাপে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ঘঁষামাজা, ফিনিশিং, রেলিং, টাইলস, প্রতিবন্ধক দেওয়ালসহ আনুষাঙ্গিক খরচ বাবদ আরো দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে ভাস্কর্যটি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

আরবি/জেডআর

Link copied!