জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় ও আদিবাসী সাওতাল সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে কান্দন সরেন (৫৫) নামে একজন আদিবাসীর মৃত্যূ হয়েছে। এই ঘটনায় তীরবিদ্ধ হয়ে কমপক্ষে আরো ২০ জন আহত হয়েছে।আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার কারিগা্ঁও গ্রামে ১৩ একর জমির সিএস রেকর্ডীয় মালিক আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিনোদন মুরমু ও মসু হাসদা। এসএ রেকর্ডে একই জমি অনিল কুমার কন্ডু ও সুনীল কুমার কন্ডু নামে পাবনার ২ ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়। দেশ ভাগের সময় তারা ভারতে পাড়ি জমালে তাদের জমি সরকার অর্পিত তালিকা ভুক্ত করে। এ বিষয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বুধু হাসদা ওই জমি নিজের দাবি করে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে এবং মামলার রায় ও ডিক্রি আদিবাসীরা পায় । পরবর্তীতে সরকার ওই মামলা হাইকোর্ট আপিল করে।
এদিকে স্থানীয় ৫০-৬০ টি ভূমিহীন পরিবার কোন প্রকার দলিল বা কাগজপত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবত ভোগদখল করে আসছে।এদিকে গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে হরিপুর উপজেলার শিহিপুর ও দামোল গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন সমবেত হয়ে ওই জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালায়।আদিবাসীরা সেখানে ঘর তোলার চেষ্টা চালায়। এ সময় ভোগদখলে থাকা ভূমিহীন পরিবারের লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে স্থানীয়রা দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও আদিবাসীরা তীর ধনুক নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে কান্দর সরেন (৬০) নামে একজন আদিবাসী প্রতিপক্ষের হামলায় ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় আদিবাসীরা তীর নিক্ষেপ করলে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তীরবিদ্ধ হয়।
তারা হলেন-পবিরুল ইসলাম ( ৪০), নুর ইসলাম, জাহেদুল ইসলাম (২৫), মো. আসিক (১৮), জাহাঙ্গীর আলম, হবিবর রহমান, মো. শফি, মো. ইসমাইল (৩০), সুসিলা সরেন, মরিয়ম সরেন, শনিরাম হাসদা। আহতদের হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ডাঙ্গীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আহসান হাবীব চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভূমিহীন পরিবারগুলো দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত ওই জমি ভোগদখল করে আসছে। উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। তার মধ্যে ৫ জন হরিপুর হাসপাতালে অন্যরা দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আরো ২/১ জন মারা যেতে পারে।
হরিপুর থানার ওসি মুহ. শরীফুল ইসলাম জানান, বিতর্কের জমিটি অর্পিত সম্পত্তি। স্থানীয় ভূমিহীনরা ওই জমি দীর্ঘদিন যাবত ভোগ দখলে ছিলেন। আজকে আদিবাসী লোকজন জমির ধখল নিতে আসলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। কোন পক্ষ এখনো অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত: ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :