মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নির্মাণের দুই বছর যেতে না যেতেই সেতুর একাংশ দেবে যায়। এতে গচ্চা যায় সরকারের প্রায় ৩২ লাখ টাকা। চার বছর আগে মাটি সড়ে গিয়ে সেতুটি দেবে গেলেও এখন পর্যন্ত মেরামত করা হয়নি। দীর্ঘ পথ ঘুরে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজারো মানুষ। ভাঙ্গা সেতুটি গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা গ্রামের সরকার বাড়ীর সংলগ্ন খালের ওপর নির্মিতব্য।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বড় কালীপুরা-তনু সরকার কান্দী সড়কের বড় কালীপুরা গ্রাম সংলগ্ন খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এতে খরচ হয় প্রায় ৩২ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৬ টাকা। প্রায় চার বছর আগে বন্যার পানির প্রবল স্রোতে সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সেতুটি দেবে গিয়ে ফাটল সৃষ্টি হয়ে দেবে গিয়ে সংযোগ সড়ক থেকে বিছিন্ন হয়ে যায়। এর পর সেতুটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি দপ্তর থেকে।
সরজমিনে দেখা যায়, ইমামপুর ইউনিয়নের তনু সরকার কান্দী ও বড় কালীপুরাসহ পাশাপাশি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সড়কের এ সেতুটির এক অংশ ওপরে দিকে আরেক অংশ নিচে দিকে ফাটল ধরে ভেঙে দেবে গেছে। সেতুর বিতরে থাকা ঢালাই থেকে অনেক স্থানে রড বের হয়ে আছে।
বিষয়টি নিয়ে বড় কালীপুরা গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, চার বছর আগে বন্যার সময় সেতু ভেঙে গেছে। এখন যাতায়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে। যে কোন প্রয়োজনে গন্তব্যে যেতে হলে আমাদের গ্রামের মানুষকে অনেক পথ ঘুরতে হয়। এই সেতু ভাঙ্গা থাকায় ছেলে মেয়েরাও ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারছে না।আমরা বয়স্করা ও বেশি হাটতে পারিনা। সেতুটি সংস্করণ করলে আমাদের উপর হয়। দ্রুত সেতুটি নির্মিত হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।
বড় কালীপুরা সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজিজুল হোসেন বলেন, আমরা নির্ধারিত সময়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারছি না। অনেক পথ ঘুরে বিদ্যালয় যেতে হয়। এলাকার প্রায় রাস্তাঘাট পাকা হলেও শুধু একটি সেতুর অভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানাই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট।
ষাটোর্ধ বৃদ্ধ রহিমা খাতুন বলে, আমরা অসুস্থ হলে এ ভাঙা ব্রিজটি কারনে কোথাও যেতে পারি না। আমরা এমনি বয়সের ভারে ঝিমিয়ে পড়েছি। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে হলে অনেক পথ ঘুরতে হয়,আমরাতো বাবা বেশি হাটতে পারিনা।
স্থানীয়দের আরও বলেন, সে সময় পরিকল্পিত ভাবে নির্মাণ হয়নি সেতুটি।সয়েল টেস্ট, অনুযায়ী পরিমাণ মতো রড, সিমেন্ট, পাথর, বালি ব্যবহার না করেই ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে সেতুটি তৈরি করায় সামান্য পানিতেই দেবে ভেঙে যায় সেতুটি। তাছাড়া প্রশাসনের গাফিলতির কারনও উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু ছাঈদ মল্লিক বলেন, সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। এখনো বরাদ্দ মেলেনি। বরাদ্দ পেলেই ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :