রংপুরের পুলিশ সুপারের আহ্বানে তার কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) নেতারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন হচ্ছে অভিযোগ করলে এ নিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদ আর হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের নেতারা প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে দু’পক্ষের নেতাদের মধ্যে তুমুল বাগবিতণ্ডা ও হইচইয়ের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে, রংপুরের পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন তার কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সমন্বয়ক এবং মসজিদের ইমামসহ ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। সভায় ইসকন-সমর্থক দুই নেতা আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন। তারা বলেন, ‘এখনও সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে।’ ইসকন কোনও মৌলবাদী সংগঠন নয় বলে দাবি করেন তারা।
এতে পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের নেতারা ইসকন নেতাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন। এ নিয়ে সভায় হইচই ও উত্তেজনা দেখা দেয়।
পূজা উদযাপন পরিষদের রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক রাম জীবন বলেন, ‘রংপুরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ ইসকনকে তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মনে করেন না।
অপরদিকে, রংপুর মহানগর ছাত্র সমন্বয়ক ইমতিয়াজ উদ্দিন ইমতি অভিযোগ করে বলেন, ‘সংখ্যালঘুরা ভারতপ্রীতি বন্ধ না করলে সমস্যা থাকবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভালো। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়াদাওয়া করি। কিন্তু একটি মহল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’
বিএনপি নেতা খয়রাত হোসেন ও জামায়াত নেতা সালাম বলেন, ‘রংপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে পতিত ফ্যাসিবাদীরা ইসকনকে দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে, কিন্তু তারা সফল হবে না।’
রংপুর কেরামতিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা বায়েজিদ আহম্মেদ বলেন, দেশে ইসলামিক রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হলে অমুসলিম ভাইয়েরা আরও বেশি স্বাধীনতা পাবেন।’
পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘পত্রিকাসহ গণমাধ্যমগুলো চটকদার শিরোনাম করে। যা দেখে মানুষ বিভ্রান্ত হয়। অথচ খবরের ভেতরে কিছু থাকে না। বিষয়টি দেখা উচিত।’
এদিকে, সভা শেষে পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে ইসকন ও হিন্দু নেতাদের আরেক দফা বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হতে দেখা যায়।
আপনার মতামত লিখুন :