ঢাকা শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪

৩০ বছর জুতা সেলাই করেছেন কানাই, ছেলেকে করিয়েছেন এইচএসসি পাস

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম

৩০ বছর জুতা সেলাই করেছেন কানাই, ছেলেকে করিয়েছেন এইচএসসি পাস

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

৩০ বছর ধরে জুতা সেলাই করে একমাত্র ছেলেকে আইএ পাস করান। কানাই রবিদাস কাহালু থানার লয়াপাড়া গ্রামে বাবা স্বর্গীয় আদালত রবিদাস এর সঙ্গে বসবাস করতেন। বাবার একমাত্র সন্তান কানাই রবিদাস। তার বাবা আদালত রবিদাসের পেশা ছিলো জুতা সেলাই ও পালিস করা। দরিদ্রতার মাঝে কানাই রবিদাসকে লেখাপড়া করাতে পারে নাই । ১৩ বছর বয়স থেকে বাবার পেশা সঙ্গে কানাই রবিদাস জীবন যুদ্ধ শুরু করে। এই পেশায় ৩০ বছর ধরে দুপচাঁচিয়াতে মাথা মোড়ে রাস্তার পাশে অত্র এলাকার মানুষের জুতার সেলাই করে পরিবারসহ ছেলে-মেয়েদের মুখে দুমুঠো খাবার যোগায়। কানাই রবিদাসের বাবা স্বর্গীয় আদালত রবিদাস তিনি ইউনিয়ন পরিষদের দাপাদার হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তার কোন বেতন পরিষদ থেকে ছিলো না। ১-২ মাস পরপর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৪৫০-৫০০ টাকা সন্মানি পেত এ দিয়ে সংসার চালাতে পারতো না। বাবা আদালত রবিদাস পরিষদের কাজ শেষে বাকি সময়টুকু জুতা সেলাই ও পালিসের কাজ করে পরিবার সন্তানদের ভালো রেখেছিলেন।

কানাই রবিদাস বিবাহিত জীবনে ১ ছেলে ২ মেয়ের বাবা। তার একমাত্র ছেলেকে জুতা সেলাই করে অর্থ উপার্জন করে দুপচাঁচিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি ও তালোড়া সরকারি শাহ এতেবারিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করিয়েছেন। কানাই রবিদাসের ছেলে পড়াশুনার পাশাপাশি বাবার কষ্ট দেখে দুপচাঁচিয়া সিও অফিসে একটি জুতার দোকানে ২০০ (দুই শত টাকা) দিন-মুজুর হিসাবে কাজ করছেন।

কানাই রবিদাস বলেন, মেয়ে মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য উর্ধগতি হওয়ায় সংসার চালানো তার পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য। 

কানাই আরো বলেন, আপনাদের পত্রিকায় প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমার ছেলের একটি কর্মসংস্থান হলে পরিবারসহ একটু ডাল ভাত খেয়ে বেচেঁ থাকতে পারবো। আমার বয়স হয়েছে এই পেশা ধরে রেখে সন্তারদেরকে একটু মানুষের মত মানুষ করতে চাই, অনেক বিত্তবান আছেন যারা আমাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ালে আমরা একটু বেঁচে থাকতে পারবো। 

আরবি/জেডআর

Link copied!